• পুলকারের রেজিস্ট্রেশন নম্বর, চালকের তথ্য দ্রুত জমা দিতে নির্দেশ প্রশাসনের
    বর্তমান | ২৭ নভেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, উলুবেড়িয়া: পুলকার নিয়ে একাধিক বেনিয়ম সামনে আসতেই এবার কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে উলুবেড়িয়া মহকুমা প্রশাসন এবং হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ। বুধবার বিকেলে মহকুমা শাসকের দপ্তরে বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন মহকুমা শাসক মানসকুমার মণ্ডল। এই বৈঠকে ছিলেন বিভিন্ন থানার আধিকারিকরা।

    সোমবার দুর্ঘটনাগ্রস্ত পুলকার নিয়ে অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষের মধ্যে চাপানউতোরের কারণে মহকুমা প্রশাসন এনিয়ে হস্তক্ষেপ করেছে। তারা পুলকার নিয়ে যাবতীয় তথ্য প্রশাসনের কাছে জমা দিতে বলেছে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। সেই তথ্যে পুলকার হিসেবে ব্যবহৃত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর, গাড়িগুলি ব্যক্তিগত নাকি বাণিজ্যিক, গাড়ির মালিকের ফোন নম্বর, চালকের নাম, লাইসেন্স ও মোবাইল ফোনের নম্বর, হেল্পার থাকলে তাঁর যাবতীয় তথ্য প্রশাসনকে জানাতে হবে। এই মর্মে প্রতিটি স্কুলকে একটি ফর্ম দেওয়া হয়েছে। সেটি পূরণ করে জমা দিতে হবে। বৈঠকে বলা হয়েছে, গাড়ির মধ্যে লোকেশন ট্র্যাকার লাগাতে হবে। তবে শুধু স্কুল কর্তৃপক্ষ নয়, এব্যাপারে অভিভাবকদেরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

    উল্লেখ্য, গত সোমবার উলুবেড়িয়ার বহিরা গ্রামে পুকুরে পুলকার উলটে যাওয়ার ঘটনায় তিন পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছিল। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পরেই একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে। জানা যায়, দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটির ফিটনেস সার্টিফিকেট (সিএফ) ছিল না। এমনকি, মাস দুয়েক আগে গাড়ি চালকের হার্ট অপারেশনও হয়েছিল। তাঁকে চিকিৎসকরা অন্তত ছ’মাস বিশ্রামের পরামর্শ দিলেও তা না মেনে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন। চালক সেদিন নিজের পুলকার না নিয়ে এক বন্ধুর গাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন বাচ্চাদের স্কুল থেকে আনতে। এইসব তথ্য সামনে আসতেই পুলকার নিয়ে সরব হয়েছেন অভিভাবকরা।

    এব্যাপারে উলুবেড়িয়ার মহকুমা শাসক বলেন, বেসরকারি স্কুলগুলির সঙ্গে বৈঠক করে পুলকার চালানো নিয়ে একাধিক নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। এবার থেকে নিয়মিত এই বিষয়গুলির উপর নজরদারি করা হবে। অন্যদিকে এদিন বিভিন্ন থানার মিটিংয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে, এখন থেকে একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রত্যেক পুলকার চালকের স্বাস্থ্য ও চক্ষু পরীক্ষা করাতে হবে। সেইসব তথ্য স্কুলে জমা রাখতে হবে। যদি কেউ নিয়ম না মানে, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই বিষয়ে হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের সুপার সুবিমল পাল বলেন, মিটিং করে বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষকে একাধিক নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। পড়ুয়াদের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা প্রতিনিয়ত এইসব পরীক্ষা করব। সবাইকে নিয়ম মেনে পুলকার চালাতে হবে। প্রশাসন ও পুলিশের এই উদ্যোগে খুশি অভিভাবকরা।
  • Link to this news (বর্তমান)