রাত ১১টার পর সমস্ত ওষুধের দোকানই বন্ধ, ভোগান্তির অন্ত নেই বারুইপুরের বাসিন্দাদের
বর্তমান | ২৭ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, বারুইপুর: কাজল ঘোষ থাকেন বারুইপুরের দত্তপাড়ায়। মাঝরাতে শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতার কারণে ইনহেলার কেনার প্রয়োজন হয়েছিল। কয়েক ঘণ্টা সাইকেলে ঘোরেন। একটাও ওষুধের দোকান খোলা পাননি। শেষে এক বন্ধুর বাইকে সোনারপুর পর্যন্ত যেতে হয়েছে তাঁকে। তিনি একা নন। সমর ভট্টাচার্য জয়নগরের বাসিন্দা। মাঝরাতে শরীর খারাপ হয়। বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে আসেন। চিকিৎসক ওষুধ লিখে দেন। জামাইয়ের বাইকে পদ্মপুকুর মোড় পর্যন্ত যান। কিন্তু সব ওষুধের দোকান বন্ধ। এরপর বারুইপুর রাসমাঠ, কীর্তনখোলা যান। কোথাও দোকান খোলা পাননি। এই দু’জন শুধু নন। এই সব অঞ্চলের অধিকাংশ বাসিন্দার বক্তব্য, রাতে শরীর খারাপ হলে বিনা ওষুধেই কাটাতে হয়। কারণ, ওষুধের দোকানই খোলা থাকে না। প্রায় প্রতিদিন রাতবিরেতে আপৎকালীন কারণে ওষুধ কিনতে দুর্ভোগে পড়তে হয়। বারুইপুরের মহকুমাশাসক চিত্রদীপ সেন জানান, সমস্যাটি দেখা হবে। বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের কাছে একাধিক ওষুধের দোকান রয়েছে। সবগুলি বন্ধ হয় রাত ১১টা নাগাদ। ফলে রোগীর পরিবার পড়ে সমস্যায়। সমস্যা হয় স্থানীয়দের। তাঁদের বক্তব্য, ‘রাতে বিপদ হতে পারে। ওষুধ লাগতে পারে। শহরে এত ওষুধের দোকান। কিন্তু সব বন্ধ থাকে। মানুষ কোথায় যাবে? কেন সবাইকে সোনারপুর বা গড়িয়া ছুটতে হয়।’ রোগীর পরিজনদের বক্তব্য, ‘হাসপাতালের চিকিৎসক ওষুধ লিখে দেন। সেই ওষুধ হাসপাতালে মেলে না। রাতে বিপদ বাড়ে। ওষুধ কিনতে গড়িয়া বা সোনারপুর ছুটতে হয়। ওষুধ আনতে আনতে রোগীর অবস্থা বেহাল হয়ে পড়ে। পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’ এক ওষুধ দোকানের মালিক বলেন, ‘দোকানে রাতে কোনও গন্ডগোল হলে পুলিশকে বললেও আসে না। তাই বন্ধ রাখতে হয়।’ বারুইপুরের দত্তপুকুরের কাজল ঘোষ সেই রাতে সাইকেল নিয়ে ছুটে গিয়েছিলেন বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের সামনে। সেখানে সব ওষুধের দোকান বন্ধ। এরপর ছোটেন গোলপুকুর মোড়ের দিকে। সেখানেও দোকান বন্ধ। এবার যান বারুইপুর পুলিশ সুপারের অফিসে। সেখানে বড় সব ওষুধ দোকান বন্ধ ছিল। নিরুপায় হয়ে যান সোনারপুর। আর জয়নগরের সমর ভট্টাচার্যকেও বাধ্য হয়ে রাসমাঠ ঘুরে যেতে হয় গড়িয়া।