আশ্রম দখল নিয়ে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত ব্যাঁটরা
আনন্দবাজার | ২৭ নভেম্বর ২০২৫
প্রোমোটিংয়ের জন্য এলাকার একটি আশ্রম দখল করাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়াল হাওড়ার ব্যাঁটরা থানার চাঁদনিপুকুর এলাকায়। পুলিশ সূত্রের খবর, গত রবিবার রাত থেকে ঘন ঘন দু’পক্ষের সংঘর্ষে মারধর, ভাঙচুরের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, পাশের দাশনগর এলাকা থেকে আসা কিছু দুষ্কৃতী ওই ঘটনায় জড়িত। ঘটনার পরে দু’পক্ষের তরফেই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। দুষ্কৃতীদের ধরতে বুধবার এলাকায় ঢুকে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গত কয়েক মাস ধরে ব্যাঁটরার মাকড়দহ রোডের চাঁদনিপুকুর এলাকায় একটি আশ্রমকে কেন্দ্র করে এলাকার দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মাঝেমধ্যেই গোলমাল হচ্ছিল। দুই দলই তৃণমূল সমর্থক। একাধিক বার সংঘর্ষ থামাতে পুলিশকে ঘটনাস্থলে যেতে হয়েছে। কিন্তু এলাকাবাসীদের অভিযোগ, পুলিশি মদতে এই দুষ্কৃতীদের একাংশ এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, প্রকাশ্যে মদ্যপান করে, মহিলাদের উত্ত্যক্ত করেও পার পেয়ে যায়। এমনকি, এলাকার সব ক’টি কারখানা থেকে ভয় দেখিয়ে তোলাবাজি করার অভিযোগ থাকলেও পুলিশ আজ পর্যন্ত মূল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
চাঁদনিপুকুর এলাকার একটি মন্দিরের সামনে রবিবার রাতে একটি খাওয়াদাওয়ার অনুষ্ঠানের সময়ে সব থেকে বড় গোলমালের সূত্রপাত। অভিযোগ, সে সময়ে একটি দল অপর দলকে আক্রমণ ও মারধর করে এলাকা থেকে বার করে দেয়। পরের দিন, সোমবার স্থানীয়দের সঙ্গে বহিরাগত দুষ্কৃতীরা এসে ওই এলাকায় তাণ্ডব শুরু করে। স্থানীয় একটি আশ্রমে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। এমনকি, প্রকাশ্যে খুনের হুমকিও দেয়। আতঙ্কিত বাসিন্দারা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ আসার আগেই দুষ্কৃতীরা এলাকা ছেড়ে পালায়।
এলাকার এক বাসিন্দা ঝুমা দাস বলেন, ‘‘গত কয়েক মাস ধরেই এলাকায় দুষ্কৃতীদের এমন তাণ্ডব চলছে। রাস্তা দিয়ে হাঁটা যায় না। রাস্তায় বসেই মদ খাচ্ছে। পুলিশকে বার বার বলা হলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’’ আর এক মহিলা বলেন, ‘‘মাঝেমধ্যে দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পাড়া। আসলে দুই দলই এলাকা দখল করতে চাইছে। মূল লক্ষ্য অবশ্য আশ্রমটি দখল করে প্রোমোটিং এবং তোলাবাজি।’’
হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘ওই এলাকায় দুষ্কৃতীমূলক কার্যকলাপ বেড়েছে। এ জন্য এলাকায় পুলিশি নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। রবি ও সোমবারের ঘটনায় যাদের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে, তাদের কাউকেই ছাড়া হবে না। এ জন্য দিনরাত তল্লাশি চলছে।’’