মিডডে মিলে পড়ুয়াপিছু (বিশেষ করে প্রাথমিকে) বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি স্কুলশিক্ষকদের অনেক দিনের। সেই দাবি পুরোপুরি মেটেনি। তাই হঠাৎ করে ডিমের দামবৃদ্ধিতে সপ্তাহে অন্তত একদিন মিডডে মিলে নিয়মমতো গোটা ডিম দেওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে ভুগছেন হুগলির বহু স্কুল কর্তৃপক্ষ। কারণ, প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের মিডডে মিলে মাথাপিছু বরাদ্দ ৬ টাকা ৭৮ পয়সা। সেখানে একটি ডিমের দামই হয়ে গিয়েছে সাড়ে সাত টাকা।
এমনিতেই আনাজের বাজার চড়া। তার উপরে সপ্তাহ দেড়েক হল ডিমের দাম ৭ টাকা থেকে বেড়ে সাড়ে ৭ টাকা হয়েছে। কম পড়ুয়া থাকা প্রাথমিক স্কুলগুলিতেই সমস্যা বেশি হবে বলে মনে করছেন অনেকে। পুরশুড়ার জঙ্গলপাড়া পল্লিমঙ্গল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৫০। প্রধান শিক্ষক স্বরূপ ঢালি বলেন, “এতদিন সপ্তাহে একদিন গোটা ডিম দিচ্ছিলাম। এ বার হয়তো মাসে দু’দিন করতে হবে।” গোঘাট ২ ব্লকের মাজদিয়া প্রাথমিক প্রধান শিক্ষক তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কঠিন অসুবিধার মধ্যেই এখনও একদিন গোটা ডিম বজায় রেখেছি। ঘাটতি নিজেদের পকেট থেকে পোষাতে হচ্ছে।’’ একই কথা জানিয়েছেন আরও কিছু প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা।খানাকুলের মাঝপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও গোঘাটের কৃষ্ণগঞ্জের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিপ্লব দাস মনে করেন, মিডডে মিলের বিষয়টি এমনই সংবেদনশীল যে সরকারি বরাদ্দে ঘাটতি হলেও নিজেদের থেকে তা পূরণ করতে হয়। সপ্তাহে অন্তত দু’দিন অতিরিক্ত পুষ্টির জন্য মাথাপিছু ১০ টাকা বরাদ্দের ব্যবস্থা হলে ছাত্র-ছাত্রীরা আরও উপকৃত হত। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মিডডে মিলে পড়ুয়াপিছু বরাদ্দ অবশ্য কিছুটা বেশি। ১০ টাকা ১৭ পয়সা।
পড়ুয়াদের মাথাপিছু বরাদ্দের মধ্যেই কিনতে হয় আনাজ, ডাল, সয়াবিন, ডিম, তেল-সহ রান্নার সামগ্রী এবং গ্যাস সিলিন্ডার। আলুর দাম কিছুটা কম থাকলেও বাজারে ফুলকপি বিকোচ্ছে কেজিপ্রতি ৫০ টাকায়, বাঁধাকপি ২০ টাকা কেজি, বেগুন ৫০ টাকা কেজি। প্রায় সব আনাজেরই দাম বেড়েছে। গ্যাস সিলিন্ডারের দাম পড়ছে দাম ৮৯০ টাকা ৫০ পয়সা। সব মিলিয়ে মিডডে মিলে পড়ুয়াদের পুষ্টির ব্যবস্থা ঠিকমতো হচ্ছে না অভিযোগ অনেক প্রধান শিক্ষকেরই।