• দুর্ঘটনায় ভেঙেছে আঙুল, ব্যান্ডেজ জড়িয়েই কাজ করছেন চোপড়ার BLO
    এই সময় | ২৭ নভেম্বর ২০২৫
  • পথদুর্ঘটনায় জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বুথ স্তরের অফিসার(বিএলও)। এ দিকে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) সংক্রান্ত কাজ বাকি। অগত্যা হাসপাতাল থেকে ফিরে হাতে ব্যান্ডেজ জড়িয়েই কাজ করছেন উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়ার লালুগছের বিএলও প্রাণগোপাল দাস। তিনি লালুগছ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং ৪৫ নম্বর বুথের বিএলও।

    প্রাণগোপাল দাস জানান, গত ২৫ নভেম্বরের মধ্যে ৮০ শতাংশ ফর্ম ফিলআপের নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য তাঁর উপরে চাপ ছিল। কিন্তু বার বার সমস্যা হচ্ছিল সার্ভার গোলমাল করায়। তিনি বিষয়টি সুপারভাইজারকে জানান। পরে পঞ্চায়েত দপ্তরে গিয়ে ওয়াই-ফাইয়ের মাধ্যমে আপলোডের কাজ চালিয়ে যান তিনি। আর ওই দিনে কাজ করতে করতে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হয়ে যায়। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেই বাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। সেই সময়ে সোনাপুর ব্রিজের কাছে একটি লরি ধাক্কা দেয় তাঁর বাইকে। দীর্ঘক্ষণ অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকার পর স্থানীয়রা তাঁকে দেখতে পান এবং উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করেন। সেখানেই চিকিৎসক তাঁকে জানান- পায়ের দু’টি আঙুল ভেঙে গিয়েছে এবং হাত ও কাঁধে রয়েছে গুরুতর চোট।

    এর পরেও নিজের দায়িত্ব থেকে সরেননি তিনি। চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে কিছুদিন বিশ্রাম করেন তিনি। ২৭ নভেম্বর হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি এবং শুরু করেন ভোটের কাজ। তাঁকে সাহায্য করছেন শ্যালক বিশ্বদেব বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘জামাইবাবু নড়াচড়া করতে পারছেন না। ধরাধরি করে তাঁকে ওঠাতে-বসাতে হচ্ছে। হাতে ব্যান্ডেজ। এই অবস্থাতেও তিনি সাধারণ মানুষের ফর্ম জমা নিচ্ছেন।’

    এলাকার বাসিন্দা নিতাই চরণ দাস বলেন, ‘ওঁর দায়িত্ববোধ সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। যে অবস্থায়ও তিনি কাজ করছেন, তা অবিশ্বাস্য। অতিরিক্ত কাজের চাপে এমন দুর্ঘটনা হওয়া দুঃখজনক। মনোবল দেখে শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে যায়।’

  • Link to this news (এই সময়)