‘কলেজিয়ামের উপরে কেন্দ্রের কোনও চাপ নেই’, বিরোধীধের অভিযোগ নস্যাৎ প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি গাভাইয়ের
প্রতিদিন | ২৭ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের বিচার ব্যবস্থার উপরে কোনও রকম চাপ সৃষ্টি করে না কেন্দ্র। আশ্বস্ত করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই। সাম্প্রতিক সময়ে বহু রাজনৈতিক নেতাই অভিযোগ করেছেন, বিজেপি ও আরএসএস সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলির উপরে লাগাতার প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে চলে। অভিযোগকারীদের মধ্যে অন্যতম লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। কিন্তু এদিন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি জানালেন, এমন অভিযোগের সারবত্তা নেই।
সংবাদ সংস্থা আইএএনএসের সঙ্গে কথা বলার সময় গাভাই বলেন, ”কোনও সরকারি হস্তক্ষেপ থাকে না। কলেজিয়াম যখন কোনও সিদ্ধান্ত নেয়, তখন বেশ কয়েকটি মতামত বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। গোয়েন্দা দপ্তর, আইন মন্ত্রকের মতামত সেই প্রক্রিয়ারই অংশ। একই ভাবে, পরামর্শদাতা বিচারক, প্রধান বিচারপতি, মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপালদের মতামতও বিবেচনা করা হয়। সমস্ত আলোচনার পরে কলেজিয়াম স্বাধীন ভাবে তার সিদ্ধান্ত নেয়।” প্রসঙ্গত, এর আগে আরেক প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কেও এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনিও জানিয়েছিলেন, এই ধরনের দাবির সত্যতা নেই। এবং বিচারব্যবস্থাকে কখনওই বিরোধী হিসেবে দেখা উচিত নয়।
এদিকে এদিন গাভাইকে প্রশ্ন করা হয়, সংবিধান কি মোদি সরকারের আমলে বিপণ্ণ নয়! এই প্রশ্নের উত্তরে ১৯৭৩ সালে কেশবানন্দ ভারতীর রায়দানের প্রসঙ্গ তুলে গাভাই বলেন, ”সেদিনের রায়ে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো সংশোধন করার ক্ষমতা সংসদের নেই।”
উল্লেখ্য, গত মাসে একটি মামলার শুনানি চলাকালীন আচমকাই আইনজীবী রাকেশ প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাইকে লক্ষ্য করে জুতো ছুড়ে মারেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আদালত কক্ষ থেকে বের করে আনার সময় তিনি চিৎকার করে বলতে থাকেন, “ভারতে সনাতন ধর্মের অপমান সহ্য করা হবে না।” ঘটনার সপ্তাহখানেক আগে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির এজলাসে মধ্যপ্রদেশের একটি ক্ষতিগ্রস্ত বিষ্ণুমূর্তি পুনরুদ্ধারের মামলার শুনানি ছিল। সেই সময় প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, “যাও, দেবতাকে জিজ্ঞাসা করো।”
অনেকের মতে, এই ঘটনার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি গাভাইকে লক্ষ্য করে জুতো ছোড়া এবং ‘সনাতনের অপমান’ সম্পর্কিত মন্তব্যের। সম্প্রতি সেই ঘটনাটি নিয়েও মুখ খুলেছেন গাভাই। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “আমি বিশ্বাস করি যে আইনের মহিমা কাউকে শাস্তি দেওয়ার মধ্যে নয়, বরং ক্ষমা করার মধ্যে রয়েছে।” হিন্দু ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগ খারিজ করে তিনি বলেন, “হিন্দু ভাবাবেগে আঘাতের কোনও প্রশ্নই ওঠে না। আমি মন্দির, দরগা, মসজিদ, গুরুদ্বার এবং গির্জা সমস্ত জায়গাতেই গিয়েছি।”