আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করা গেলেও নবম-দশমের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া ওই সময়সীমার মধ্যে শেষ করা কার্যত অসম্ভব বলে মনে করছেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) কর্তারা। এ দিকে, সুপ্রিম কোর্ট ওই সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে এবং বলেছে, চাকরিহারা শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকবে। এই পরিস্থিতিতে সময়সীমা বাড়ানোর আর্জি নিয়ে এসএসসি শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হবে কি না, সেই নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত, বুধবারই এসএসসি-র কয়েকটি মামলা বিচারের জন্য হাই কোর্টে পাঠিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। চলতি নিয়োগে এসএসসি-র পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্নও তুলেছে শীর্ষ আদালত।
এই পরিস্থিতিতে চলতি নিয়োগ এবং সময়সীমার মধ্যে নিয়োগ শেষ না-হওয়া নিয়ে উদ্বেগে আছেন চাকরিহারা শিক্ষকেরা। চাকরির ধারাবাহিকতা ভঙ্গ হলে পরবর্তী কালে কর্মজীবনে কী সমস্যা হবে, তা নিয়েও নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে তাঁদের মনে।
এসএসসি সূত্রের খবর, বর্তমানে একাদশ-দ্বাদশের তথ্য যাচাইয়ের কাজ চলছে। শুরু হয়েছে বাংলা এবং ইংরেজির ইন্টারভিউ প্রক্রিয়াও। নবম-দশমের ফল বেরোলেও তার তথ্য যাচাই শুরু হবে একাদশ-দ্বাদশের তথ্য যাচাই শেষ (৪ ডিসেম্বর) হওয়ার পরে। তার পরে পুরো ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া, কাউন্সেলিং হয়ে নিয়োগ শেষ করার জন্য সপ্তাহ তিনেক হাতে থাকবে। “ওই সময়ের মধ্যে প্রক্রিয়া শেষ করা কার্যত অসম্ভব,” বলছেন এক এসএসসি-কর্তা। তাঁর ব্যাখ্যা, একাদশ-দ্বাদশে শূন্যপদ ১২,৪৪৫টি। তার জন্য তথ্য যাচাই করতে ১৬ দিন সময় লাগছে। সেখানে নবম-দশমে শূন্যপদ ২৩,২১২টি। তার জন্য প্রায় ৩৭ হাজার চাকরিপ্রার্থীকে তথ্য যাচাইয়ে ডাকা হবে। এই কাজ ১৬ দিনে শেষ করা মুশকিল।
ফের নিয়োগের পরীক্ষায় বসা চাকরিপ্রার্থীরা এই সময়সীমা নিয়েও চিন্তিত। তাঁদের এক জন বলেন, “৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ না-হলে চাকরি জীবনে ছেদ পড়বে। তা হলে কি সে-ক্ষেত্রে আগের পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা এবং ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে? আর্থিক দিক থেকেও ক্ষতির মুখে পড়তে হবে!” এ দিকে, আরও চিন্তা বাড়িয়েছে এ দিন শীর্ষ আদালতের নির্দেশ। এক চাকরিহারা শিক্ষক বলেন, “নতুন নিয়োগ নিয়ে যে প্রশ্নগুলি উঠেছে, সেগুলির নিষ্পত্তির জন্য মামলা হাই কোর্টে পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। অভিজ্ঞতার জন্য ১০ নম্বর পাব কি না, তা হাই কোর্ট স্থির করবে। তারপর আরও জটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষমেশ স্থগিত হবে না তো?”