রাজ্যজুড়ে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা বা এসআইআর-এর কাজের মধ্যেই পোর্টাল নিয়ে বারবার সমস্যায় পড়ছেন বিএলও’রা। বুধবার রাত থেকেই আচমকাই বন্ধ হয়ে যায় পোর্টাল ও বিএলও-অ্যাপ— এমনই অভিযোগ করেছেন নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক সনৎ দে-র কাছে। তাঁর দাবি, পোর্টাল অচল থাকায় বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার বুথ স্তরীয় আধিকারিক (বিএলও), অথচ কাজের চাপ ক্রমেই বাড়ছে।
বৃহস্পতিবার সকালে সমাজমাধ্যমে সনৎ দে লেখেন, ‘গত রাত থেকে সারা বাংলায় বিএলও অ্যাপ সম্পূর্ণ বন্ধ। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হচ্ছে। কিন্তু যন্ত্রপাতিই যদি কাজ না করে তবে বুথে থাকা মানুষেরা কীভাবে দায়িত্ব পালন করবেন?’ বিধায়কের বক্তব্য, এই ধরনের বিভ্রাটের ফলে ভোটার তালিকা সংশোধনের গোটা প্রক্রিয়াই ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
নৈহাটির একাধিক বিএলও জানিয়েছেন, বুধবার গভীর রাত থেকেই অ্যাপ খুলছিল না। বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ লগইন করা গেলেও গতি এতটাই কম যে, কাজ এগোচ্ছে শামুকের গতিতে। নতুন ভোটারদের নাম তোলা, পুরোনো তথ্য সংশোধন, আপত্তি খতিয়ে দেখা— এসব সবই আটকে থাকা অবস্থায় দুশ্চিন্তা বাড়ছে বিএলও-দের মধ্যে। তাঁদের কথায়, ‘এই অবস্থায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা প্রায় অসম্ভব।’
যদিও এই অভিযোগের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। কমিশনের নীরবতায় সন্দেহ আরও ঘনীভূত হচ্ছে বলে মনে করছে শাসকদলের একাংশ।
প্রসঙ্গত, এমনিতেই এসআইআর ঘিরে উত্তেজনা আগেই চরমে উঠেছে। শাসকদলের অভিযোগ, অতিরিক্ত কাজের চাপের কারণে ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিএলও-সহ মোট ৩৫ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন ভারতের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে। তাঁর বক্তব্য, এসআইআর-এর সময়সীমা ও কাজের ধরনকে কেন্দ্র করে ‘অস্বাভাবিক তাড়াহুড়ো’ চলছে, যার ফল ভোগ করছে সাধারণ সরকারি কর্মীরা।
এসআইআর পোর্টালের বিভ্রাট সেই উত্তেজনাকে আরও ঘনীভূত করেছে। প্রশ্ন উঠছে, সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ না হলে দায় নেবে কে? প্রশাসন, না কমিশন?