• লোকালয়ে ঢুকছে হাতি-বাঘ! ‘রেসকিউ-অপারেশনে’ বনকর্মীদের হাতে ডেনমার্কের অত্যাধুনিক বন্দুক
    প্রতিদিন | ২৮ নভেম্বর ২০২৫
  • টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: জঙ্গলের পথে বুনো হাতি সামলানো হোক, কিংবা আহত চিতাকে উদ্ধার করা, বাঁকুড়া বনদপ্তরের ভরসা ছিল দু’টি পুরনো ট্রাঙ্কুলাইজিং বন্দুক। এমনকী বাঁকুড়ার মতো জায়গায় হঠাৎ দেখা দেওয়া বাঘকে নিয়ন্ত্রণে আনতেই বন কর্মীদের ভরসা ছিল এই বন্দুকই। যা নিয়ে বনকর্মীদের রীতিমত সমস্যার মধ্যে পড়তে হতো। যা নিয়ে যথেষ্টে উদ্বেগে ছিলেন বনকর্মীরা। এবার তা কাটতে চলেছে। বনকর্মীদের হাতে উঠতে চলেছে ডেনমার্কের তৈরি আধুনিক কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস-চালিত ড্যানিজেক্ট বন্দুক। আজ, বৃহস্পতিবার বেলিয়াতোড় রেঞ্জ অফিসে হয়ে গেল সেই বন্দুকেরই প্রশিক্ষণ! বন আধিকারিকদের কথায়, নতুন প্রযুক্তি তৈরি এই বন্দুক বদলে দেবে বাঁকুড়ার রেসকিউ-অপারেশন।

    ইতিমধ্যে উত্তরবঙ্গের বনকর্মীরা নতুন প্রযুক্তির এই বন্দুক হাতে পেয়ে গিয়েছেন। কিন্তু দক্ষিণবঙ্গের বনকর্মীরা এখনও হাতে পাননি। তবে বনদপ্তর সূত্রে খবর, শীঘ্রই দক্ষিণবঙ্গের বাঁকুড়া জেলা নতুন প্রযুক্তির এই বন্দুক পেয়ে যাবে। বনাঞ্চল ছেড়ে কখনও হাতি, আবার কখন বাঘকেও দেখা গিয়েছে! তা সামলাতে দীর্ঘদিন ধরে আধুনিক অস্ত্রের দাবি জানিয়ে আসছিলেন বনকর্মীরা। এদিন প্রশিক্ষণের ফাঁকেই বাঁকুড়া উত্তর বিভাগের ডিএফও শেখ ফরিদ বলেন, “আমাদের দু’টোই মান্ধাতা আমলের বন্দুক আছে। চাপ ঠিক না থাকলে শট যেতই না।”

    তাঁর কথায়, ”বড়জোড়ায় ৭০ টি বুনো হাতি রয়েছে। মাঝে মধ্যেই শহর লাগোয়া বড়জোড়ায় হাতিগুলি বেরিয়ে পড়ে। তা সামলাতে গেলে পুরনো বন্দুক একেবারেই ভরসা দিত না।” আধুনিক এই বন্দুক হাতে আসলে দ্রুত পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হবে বলেই আশা ডিএফও শেখ ফরিদের।

    কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস-চালিত ড্যানিজেক্ট বন্দুক বৈশিষ্ট্য কী? বনদফতর জানাচ্ছে, উচ্চচাপ নিউম্যাটিক সিস্টেমে তৈরি এই বন্দুক নির্দিষ্ট দূরত্ব, প্রাণীর ওজন এবং শরীরের পুরুত্ব অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত প্রেশারে ডার্ট ছুড়তে পারে। ফলে ডার্টের বিচ্যুতি কমে, শট হয় আরও স্থির। আঘাতও কম লাগে। ডার্ট ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে স্প্রিং-অ্যাক্টিভেটেড সিস্টেমে ওষুধ শরীরে ছড়িয়ে পড়ে বলে দাবি বনকর্মীদের। শুধু তাই নয়, সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিকে দ্রুত কার্যকর করতেও সাহায্য করে। 

    বেলিয়াতোড়ের বনকর্মীরা জানাচ্ছেন, ”পুরনো বন্দুক দিয়ে বড় আকারের প্রাণীকে লক্ষ্য করে শট নেওয়া রীতিমতো ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। ক্ষেত্রবিশেষে দু’বার, তিনবার শট নিতে হত। ততক্ষণে পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকত।” নতুন বন্দুকের প্রায় নিখুঁত নিশানা সেই সমস্যাই মিটিয়ে দেবে বলে আশা তাঁদের।

    জানা গিয়েছে, ড্যান ইনজেক্ট পাওয়ার পর বনদপ্তর রেঞ্জভিত্তিক একটি র‍্যাপিড রেসপন্স ব্যবস্থাও গড়ে তুলতে চায়।
  • Link to this news (প্রতিদিন)