• জোটশরিকের ‘হুলে’ বিদ্ধ BJP, ভোটের আগে ফাঁস টাকার পাহাড়, মহারাষ্ট্রেও ভাঙন?
    এই সময় | ২৮ নভেম্বর ২০২৫
  • ভারতের রাজনীতিতে ‘টাকার খেলা’ নতুন নয়। কিন্তু যখন জোটশরিকই তার সঙ্গীর বিরুদ্ধে ‘টাকা দিয়ে ভোট কেনার’ বিস্ফোরক অভিযোগ তোলে, তখন প্রশ্ন উঠে যায় গণতন্ত্রের মৌলিক ভিত্তি নিয়েই। বৃহস্পতিবার এমনই এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। মহারাষ্ট্রের সিন্ধদুর্গ জেলার মালভানে এক BJP কর্মীর বাড়িতে তল্লাশি অভিযান (তাঁর ভাষায় স্টিং অপারেশন) চালিয়ে নগদ টাকার পাহাড় উদ্ধার করলেন শিবসেনা বিধায়ক নীলেশ রানে।

    উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা নয়, একনাথ শিন্ডের শিবসেনা। রাজ্যে যারা BJP-র সঙ্গে জোটে থেকে সরকার চালাচ্ছে। ঘটনাটি লাইভ স্ট্রিম করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন নীলেশ রানে। লাইভ স্ট্রিমে এক BJP কর্মীর বাড়ির শোওয়ার ঘর থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ ভর্তি একটি ব্যাগ উদ্ধার করতে দেখা যায় তাঁকে। এর পরেই তিনি পুলিশে খবর দেন এবং অভিযোগ করেন, ওই ঘরে একই রকম নদগ ভর্তি আরও অন্তত তিন-চারটি ব্যাগ আছে।

    তিনি সরাসরি BJP-র বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ করেছেন। শিবসেনা বিধায়কের দাবি, পুর ভোটের আগে এই বিষয়ে নির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়েই তিনি এই ‘স্টিং অপারেশন’ করেছেন। অভিযুক্ত BJP কর্মীর দাবি, তিনি ব্যবসার প্রয়োজনে বাড়িতে ওই বিপুল নগদ রেখেছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক মহলে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

    BJP-র প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। মহারাষ্ট্র BJP-র সভাপতি রবীন্দ্র চহ্বন জানিয়েছেন, ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি শিবসেনার সঙ্গে জোট টিকিয়ে রাখতে আগ্রহী। প্রসঙ্গত ওই দিনই মহারাষ্ট্রের পুরসভা এবং নগর পঞ্চায়েতের ভোট হবে। তার পরেই তিনি নীলেশ রানের অভিযোগের বিষয়ে মুখ খুলবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

    নীলেশ রানের এই অভিযান এবং ভিডিয়ো প্রকাশ আরও একবার দেখিয়ে দিল মহারাষ্ট্রে BJP এবং শিবসেনা— মহায়ুতি জোটের দুই শরিকের মধ্যে সবকিছু মসৃণ ভাবে চলছে না। দিন কয়েক আগেই মহারাষ্ট্রের মন্ত্রিসভার বৈঠক বয়কট করেছিলেন শিন্ডে-সেনার মন্ত্রীরা। BJP-র বিরুদ্ধে দল ভাঙানোর অভিযোগ করেছিলেন তাঁরা।

    রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ছন্দটা কেটে গিয়েছিল মহায়ুতি সরকার গঠনের সময়েই। শিন্ডেকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়াটা ভালো ভাবে মেনে নিতে পারেনি শিবসেনা। তার পরে শরদ পাওয়ারের দল ভাঙিয়ে একের পর এক নেতাকে BJP-তে যোগদান করানোটাও তারা ভালো ভাবে নেয়নি। পুর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই জোট শরিকের মধ্যে বিশ্বাস এবং বোঝাপড়ার অভাবটা প্রকাশ্যে চলে এসেছে।

    এই ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল, যখন কর্নাটকে কংগ্রেস সরকারের অন্তর্দ্বন্দ্ব তুঙ্গে। তা হলে কি আরব সাগরের পারেও ঘনাচ্ছে কর্নাটকের মতো বড় এক রাজনৈতিক সঙ্কট? উসকে উঠেছে প্রশ্নটা। মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ফের ঘেঁটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আসন্ন নির্বাচনের ফলাফলের উপরে অনেক কিছুই নির্ভর করছে।

  • Link to this news (এই সময়)