• জল জীবন মিশন: আর্থিক অনিয়ম হয়নি, কেন্দ্রকে জানাল রাজ্য, দুর্নীতি তালিকায় ‘ডাবল ইঞ্জিন’ গুজরাত, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র
    বর্তমান | ২৮ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: জল জীবন মিশন নিয়ে রাজ্যভিত্তিক বৈঠক শুরু করেছে মোদি সরকার। সেইমতো গত মঙ্গলবার জল জীবন মিশন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে বাংলার আধিকারিকদের সঙ্গে  বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা। 

    সূত্রের খবর, দিল্লিতে সচিব পর্যায়ের এই বৈঠকে রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বাংলাতেই জল জীবন মিশন প্রকল্পের বেশি অগ্রগতি হয়েছে। এমনকি আর্থিক কোনও অনিয়মের ঘটনাও ঘটেনি। এই সংক্রান্ত বেশ কিছু নথিপত্রও রাজ্যের আধিকারিকরা পেশ করেছেন বলে সরকারি সূত্রে খবর। যদিও এই বৈঠকের বিষয়ে সরকারিভাবে কোনও পক্ষই মন্তব্য করেনি। 

    আর এর মধ্যেই সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর এক তথ্য। আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে বাংলার টাকা দিতে গড়িমসি করলেও সেই একই প্রকল্পে গুজরাতের বেলায় কোনও বাধা নেই। বিজেপি শাসিত হরিয়ানা বা ছত্তিশগড়েও টাকা আটকে থাকার কোনও অভিযোগ নেই। অথচ প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প ‘জল জীবন মিশনে’ নরেন্দ্র মোদির নিজের রাজ্য গুজরাতেই ব্যাপক আর্থিক অনিয়মের তথ্য সামনে এসেছে। নাম জুড়েছে ‘ডাবল ইঞ্জিন’ মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, ত্রিপুরারও। শুধু গুজরাতেই জল জীবন মিশনে ১২০ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকার অনিয়ম হয়েছে। রাজস্থানে এই অনিয়মের পরিমাণ ৫ কোটি ৩৪ লক্ষ ৪৭ হাজার, মহারাষ্ট্রে ২ কোটি ২ লক্ষ ৪ হাজার ২০০ টাকা। এমনকি, ত্রিপুরার মতো ছোটো রাজ্যেও দুর্নীতির দাগ লেগেছে ১ কোটি ২২ লক্ষ ৯৬ হাজার ৭৩৯ টাকার। সব মিলিয়ে উল্লিখিত ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যে মোদির হর ঘর জল পৌঁছনোর প্রকল্পে ১২৯ কোটি ২৪ লক্ষ ৪৭ হাজার ৯৩৯ টাকার অনিয়ম ধরা পড়েছে। কেন্দ্রের রিপোর্টে বিষয়টি ধরা পড়ায় সংশ্লিষ্ট জলশক্তি মন্ত্রক তো বটেই, সরকারের অন্দরেই অস্বস্তির আবহ তৈরি হয়েছে। যদিও মন্ত্রক বলছে, যে রাজ্যই হোক, জল জীবন মিশনে কোনও দুর্নীতি চলবে না। সেই কারণেই তো রাজ্যে রাজ্যে অভিযান করে বেনিয়ম ধরতে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে।

    মন্ত্রক সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের মোট ২০টি রাজ্যে জল জীবন মিশন প্রকল্পের বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন অনিয়ম নথিভুক্ত হয়েছে। জল জীবন মিশনে কোথায় কেমন কাজ হচ্ছে, তার নজরদারিতে কেন্দ্রের ২৮৭ জন অফিসার দেশের ৪৭৩টি গ্রামে অভিযান চালিয়েছেন। আর তাতেই ধরা পড়েছে নল, পাইপলাইন লাগানো হলেও ২৬ শতাংশ কাজই করে না। তবে ওইসব রাজ্য ৬০৭টি এহেন অনিয়মের ঘটনায় ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছে। ৬২১ জন বিভাগীয় আধিকারিক, ৯৬৯ জন বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার এবং ১৫৩টি থার্ড পার্টি ইনস্পেকশন এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

    অন্যদিকে, কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকে বাংলার আধিকারিকদের দাবি, জল জীবন মিশনের আওতায় প্রত্যেক বাড়িতে নলবাহিত বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের হার বাংলায় প্রায় ৫৭ শতাংশ। হর ঘর জল কর্মসূচিতে প্রায় ৯০ শতাংশ গ্রামীণ এলাকার বাড়িতেই এই কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
  • Link to this news (বর্তমান)