নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: আইনের শাসন কি আদৌ আছে! পরপর খুনের পর এবার এমনই প্রশ্ন উঠছে কালিয়াচককে ঘিরে।
এবার সালিশি সভায় বাঁশ, লাঠি দিয়ে মারধরের পর হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হল এক ব্যক্তিকে। মৃতের নাম একরামুল শেখ (৪৫)। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কালিয়াচক থানা এলাকার রাজনগরে। গুরুতর জখম হয়েছেন কয়েকজন। কালিয়াচকের এসডিপিওর নেতৃত্বে এলাকায় মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। নামানো হয়েছে র্যাফ। বেশ কয়েকজনের নামে অভিযোগ জমা পড়েছে। মালদহের বিদায়ী পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব বলেন, সাতজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। কালিয়াচক হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে একজনের। পরে মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাদশা শেখ নামে আরেক জনের মৃত্যু হয়।
এই আবহে এদিন বদলি করা হয়েছে জেলার পুলিশ সুপারকে। উত্তর দিনাজপুরের এসপি, ট্রাফিক করে পাঠানো হয়েছে প্রদীপকে। তাঁর জায়গায় মালদহের এসপি হচ্ছেন অভিজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়। মালদহের পুলিস সুপার বলেন, আমি এই জেলায় প্রায় সাড়ে তিন বছর ছিলাম। এটা রুটিন বদলি। পুলিশ সূত্রে খবর, রাজনগরে ঘটনার সূত্রপাত বুধবার দুপুরে। গঙ্গার চরে একটি জমিতে মুস্তাফা শেখ ভুট্টা চাষ করেছিলেন। পাশে জমি একরামুল শেখের। ওইদিন ট্রাক্টরে করে নিজের জমিতে কিছু জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছিলেন একরামুল। অভিযোগ, তিনি মুস্তাফার জমির উপর দিয়ে ট্র্যাক্টর নিয়ে গেলে ফসল নষ্ট হয়। এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে লোকজনের মধ্যে ব্যাপক গোলমাল বাধে। সেই সময় একরামুলের পক্ষের একজনকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ ওঠে। মীমাংসার জন্য বৃহস্পতিবার কালিয়াচক থানা এলাকার রাজনগর মডেল মাদ্রাসায় সালিশি সভা ডাকা হয়েছিল। আলোচনার মাঝেই শুরু হয় বাঁশ, লাঠি নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ। একরামুলের আত্মীয় সানিউল শেখের অভিযোগ, কিছুক্ষণ আলোচনার পর মুস্তাফার লোকজন ধাক্কাধাক্কি করতে করতে বেরিয়ে আসে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপ দেয় একরামুলকে। সানিউলের কথায়, ওরা হাঁসুয়া, লাঠি নিয়ে সালিশি সভায় এসেছিল বুঝতে পারিনি। এদিকে বারবার চেষ্টা করেও মুস্তাফার পরিবারের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দশজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় কালিয়াচক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে একরামুলের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর ময়নাতদন্ত হয়েছে মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। একরামুলের স্ত্রী নাজেমা বিবি বলেন, জমির উপর দিয়ে ট্রাক্টর নিয়ে যাওয়া নিয়ে সালিশি সভায় স্বামীকে কুপিয়ে খুন করেছে। ওদের কঠোর শাস্তি চাই।