সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্যের বাড়িতে যাবেন বর্তমান মেয়র গৌতম দেব। অশোকবাবুকে আমন্ত্রণ জানাবেন শিলিগুড়ি পুরসভার নতুন ভবনের সভাগৃহের দ্বারোদ্ঘাটনে উপস্থিত থাকতে।
আসলে সৌজন্যের মোড়কে কটাক্ষ করতেই বৃহস্পতিবার একথা বলেছেন শহরের বর্তমান মেয়র। শিলিগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহাকাল মন্দির তৈরির কথা ঘোষণা করেছেন। চব্বিশ ঘণ্টা আগে সাংবাদিক সম্মেলন করে অশোকবাবু ওই মন্দিরের স্থান নির্বাচনের সমালোচনা করেন। তাঁর কথায়, মন্দির তৈরি করা সরকারের কাজ নয়। শিল্প স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট জমি রাখা হয়েছিল। সেখানে শিল্প স্থাপন করলে কর্মসংস্থান হত, অর্থনীতির বিকাশ ঘটত।
অশোকবাবুর বিরুদ্ধে তোপ দাগতে বৃহস্পতিবার পাল্টা সাংবাদিক সম্মেলন করেন গৌতম দেব। তিনি বলেন, পর্যটনকে বামেরা বিনোদন হিসেবে দেখত। তাই বাজেটে মাত্র ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ করত। রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আসার পর পর্যটনকে শিল্প হিসেবে দেখছে। ৪০০ কোটিরও বেশি টাকা বাজেটে পর্যটনের জন্য বরাদ্দ করে তৃণমূল সরকার। কর্মসংস্থানের সব থেকে বড় জায়গা পর্যটন। সেই ভাবনাতে মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়িতে মহাকাল মন্দির তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নিছক ধর্মীয় স্থান গড়ে তোলা নয়, মুখ্যমন্ত্রী দূরদৃষ্টি সম্পন্ন। তাই তিনি এই মহাকাল মন্দিরের মধ্য দিয়ে এখানেই কালচারাল অ্যান্ড রিলিজিয়ান ইনস্টিটিউট গড়ে তুলতে চলেছেন। এর ফলে শিলিগুড়ি ও আশপাশ এলাকায় পর্যটনের ব্যাপক প্রসার ঘটবে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। সেই সঙ্গে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
এর রেশ ধরেই গৌতম দেব আরও বলেন, আসলে অশোকবাবুরা এভাবে ভবিষ্যতকে দেখেননি। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী দূরদৃষ্টি সম্পন্ন। তাই তিনি ভবিষ্যতের কথা ভেবে এ ধরনের কালচারাল অ্যান্ড রিলিজিয়ান ইনস্টিটিউট গড়ার দিকে পা বাড়িয়েছেন। দীঘাতে জগন্নাথ মন্দির তৈরি করার পর অনেকেই সমালোচনা করেছিলেন। কিন্তু জগন্নাথ মন্দির তৈরির পর দীঘাতে পর্যটকের ঢল নেমেছে। অর্থনীতিতে জোয়ার এসেছে। শিলিগুড়িতে মহাকাল মন্দির তৈরির পর এখানেও পর্যটনের চেহারা বদলে যাবে। অশোকবাবু ও অন্যান্যরা গাত্রদাহ থেকে মহাকাল মন্দির নিয়ে সমালোচনা ও বিরোধিতা করছেন। প্রচারে থাকার জন্য বাস্তবকে অস্বীকার করে এ ধরনের বিবৃতি দিচ্ছেন।
অশোকবাবুর বাড়িতে আমন্ত্রণ জানানোর প্রসঙ্গে গৌতম বলেন, অশোকবাবু এই শহরের প্রাক্তন মেয়র। তার আগে শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। রাজ্যের দীর্ঘদিনের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন উনি। শিলিগুড়ি পুরসভাকে কী অবস্থায় ফেলে রেখে গিয়েছেন, আর তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর সাড়ে তিন বছরের মধ্যে কী পরিবর্তন হয়েছে, সেটা মিলিয়ে দেখার জন্য অশোকবাবুকে বাড়িতে গিয়ে আমন্ত্রণ জানিয়ে আসব, যাতে উনি পুরসভার নতুন ভবনের সভাগৃহের দ্বারোদ্ঘাটন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন।
যদিও অশোকবাবু বলেন, একজন নাগরিক হিসেবে যেকোনও সময় আমি পুরসভায় যেতে পারি। গৌতম দেবের উন্নয়ন দেখতে যাব না। মেয়র থাকার সময় আমরা নাগরিক পরিষেবায় অগ্রাধিকার দিয়েছি। তাই একটা চেয়ারও বদলাইনি।