নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: নদীয়া জেলায় খসড়া ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়তে চলেছে এক লক্ষের বেশি নাম। যার মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি নাম মৃত ভোটারের। এছাড়াও ‘ডুপ্লিকেট’, ‘শিফটেড’ এবং ‘অ্যাবসেন্ট’ ভোটারও রয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত কার্যত নিশ্চিতভাবে বাদ পড়া ভোটারের সংখ্যা ছিল ৯২ হাজার। ৮০ শতাংশ ডিজিটাইজেশনের পর এমনই তথ্য উঠে এসেছে। জেলার ৪৪ লক্ষ ভোটারের মধ্যে ৩৫ লক্ষ ভোটারের ডিজিটাইজেশনের কাজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত শেষ হয়েছে। আগামী দুই থেকে তিনদিনের মধ্যে বাকি কাজ শেষ করা নিয়ে আশাবাদী প্রশাসনের আধিকারিকরা। যদিও প্রশাসনের আধিকারিকদের দাবি, ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়া একশো শতাংশ সম্পূর্ণ হলে বাদ পড়া ভোটারের সংখ্যা অনায়াসেই এক লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, নদীয়া দক্ষিণের অধিকাংশ বিধানসভায় মৃত ভোটারের নামই বেশি। যা আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এসআইআরের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষের মুখে। ফর্ম বিলির কাজ আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের ৯ তারিখ খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। ৪ ডিসেম্বরের আগেই দ্রুত ফর্ম সংগ্রহ এবং ডিজিটাইজেশনের কাজ শেষ করতে চাইছে নদীয়া জেলা প্রশাসন। নদীয়া জেলাতেই ৯৯.৮৪ শতাংশ ভোটারকে ফর্ম বিলি করা হয়েছে। অর্থাৎ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলার ৪৪ লক্ষ ১৮ হাজার ৮৩৮ ভোটারের মধ্যে ৪৪ লক্ষ ১১ হাজার ৭৮১ ভোটারকে ফর্ম দেওয়া হয়েছে। বিএলওদের কাজে গতি এসেছে। এখন খসড়া তালিকায় কত ভোটারের নাম বাদ যায়, সেই দিকেই তাকিয়ে সব মহল। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বাদ পড়া ৯২ হাজার নামের মধ্যে ৬০ হাজার নাম মৃত ভোটারের। যার মধ্যে সর্বাধিক মৃত ভোটার কল্যাণী বিধানসভায়। সেখানে সংখ্যাটা ৫৩২৪। অন্যদিকে রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভায় ৪৬৫৩, এবং রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম বিধানসভায় ৪২০৪ জন মৃত ভোটারের নাম পাওয়া গিয়েছে। তিনটি বিধানসভাই গেরুয়া গড় নদীয়া দক্ষিণের অন্তর্গত। আবার নদীয়া দক্ষিণের কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভায় মৃত ভোটারের নাম ২০৯৪টি। নদীয়া উত্তরের মধ্যে একমাত্র চাপড়া বিধানসভাতেই মৃত ভোটারের নাম বেশি। সেখানে ৪৬৬৮ জন মৃত ভোটারের নাম পাওয়া গিয়েছে। অন্যদিকে নদীয়া উত্তরের বিধানসভাগুলোর মধ্যে কালীগঞ্জে ৩১২৬, নাকাশিপাড়া বিধানসভায় ৩৪৩৭ এবং করিমপুর বিধানসভায় ২৫০০টি মৃত ভোটারের নাম পাওয়া গিয়েছে। প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, নদীয়া জেলায় আপাতত অনুপস্থিত ভোটারের নাম পাওয়া গিয়েছে ৫৩৬৫টি, স্থানান্তরিত ভোটারের সংখ্যা ২৫ হাজার ৭১৩ জন এবং ডুপ্লিকেট ভোটার ১৬২৪। এছাড়াও ফর্ম জমা দিতে অনিচ্ছুক ভোটার ২৭৬ জন। এই সমস্ত ভোটারের নাম খসড়া তালিকা থেকে বাদ যাওয়া একপ্রকার নিশ্চিত। তেমনি আবার নজর থাকছে ম্যাপিংয়ের দিকেও। কারণ কত ভোটারকে ২০০২-এর ভোটার তালিকার সঙ্গে ২০২৫ সালের ভোটার তালিকার মিল করানো গেল, সেই পরিসংখ্যানটাও তাৎপর্যপূর্ণ। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ম্যাপিং না হওয়া ভোটারের সংখ্যা ১ লক্ষ ৯১ হাজার। কল্যাণী, রানাঘাট দক্ষিণ, কৃষ্ণগঞ্জ এবং রানাঘাট উত্তর-পূর্ব বিধানসভায় ম্যাপিং না হওয়া ভোটারের সংখ্যা সর্বাধিক। প্রশাসনের আধিকারিকদের কথায়, বর্তমানে বিএলওরা মৃত, অনুপস্থিত, স্থানান্তরিত, ডুপ্লিকেট ভোটারদের আপডেট করার কাজে বেশি জোর দিয়েছেন। পাশাপাশি ডিজিটাইজেশনের কাজ জোরকদমে চলছে। • প্রতীকী চিত্র