• দেবেন মাহাতো হাসপাতাল থেকে পালিয়ে চলন্ত বাসে মৃত্যু হল চিকিৎসাধীন রোগীর
    বর্তমান | ২৮ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া ও সংবাদদাতা, মানবাজার: গত মঙ্গলবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে চলন্ত বাসে। শুনতে অবাক লাগলেও এমনটাই ঘটেছে পুরুলিয়া জেলায়। জানা গিয়েছে, মৃতের নাম রামকানাই সিং সর্দার (৪৬)। অভিযোগ, দেবেন মাহাতো মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সদর ক্যাম্পাস থেকে চিকিৎসাধীন ওই রোগী নিরাপত্তার ফাঁক গলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন। এরপরই মাঝ রাস্তায় চলন্ত বাসে তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মৃতের পরিবারের সদস্যদের প্রশ্ন, হাসপাতালের অন্দরমহলে কড়া নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও কীভাবে পালিয়ে গেলেন ওই রোগী। চিকিৎসাধীন রোগীর দেখভালের দায়িত্ব কার? ঘটনা প্রসঙ্গে হাসপাতাল সুপার সুকমল বিষয়ী বলেন, ওই রোগী জলাতঙ্কে আক্রান্ত ছিলেন। এ ধরনের রোগীদের মধ্যে পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা লক্ষ্য করা যায়। তবে এক্ষেত্রে সঠিক কী ঘটনা ঘটেছিল তা খতিয়ে দেখা হবে। সেইসঙ্গে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও সুদৃঢ় করে তোলা হবে। 

    বরাবাজার ব্লকের গিদিঘাটি গ্রামের বাসিন্দা রামকানাই সিং সর্দার। গত রবিবার পেট ব্যথা সহ বমি ও খাবার খেতে না পারার সমস্যা নিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। চিকিৎসা শুরু হতেই স্পষ্ট হয়, আনুমানিক চার মাস আগে ওই যুবক পোষ্য কুকুরের কামড়ে জখম হয়েছিলেন। তবে সে সময়ে কোনও চিকিৎসা করাননি। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় হাসপাতালে ওই যুবকের চিকিৎসা শুরু হয়। সোমবার তিনি হাসপাতালের বেড ছেড়ে পালিয়ে যান। যদিও বিকেল নাগাদ তিনি ফের ওই হাসপাতালের বেডে ফিরে আসেন। তবে কিছু সময় বাদেই ফের একবার ওই যুবক হাসপাতাল ছেড়ে উধাও হয়ে যান। ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বরাবাজার থানার দ্বারস্থ হয়। শেষ পর্যন্ত পুলিশ ওই যুবককে খুঁজে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর সেখান থেকে তাঁকে মেডিকেলের সদর ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত করা হয়। শুরু হয় চিকিৎসা। তবে রাত পার হতেই মঙ্গলবার ওই যুবক সদর ক্যাম্পাস ছেড়ে চম্পট দেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে তিনি একটি বাসে চেপেছিলেন। বরাবাজার এলাকায় ওই বাসেই তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনায় জেলাজুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। 

    মৃতের দাদা রাম সিং সর্দার বলেন, হাসপাতালের অন্দরমহলে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও আমার ভাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় কীভাবে বেরিয়ে গেল? তাঁকে দেখে রাখার দায়িত্ব তো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ছিল। আমাদের মনে হয়, সঠিক চিকিৎসা পেলে হয়তো আমার দেওর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারত। 
  • Link to this news (বর্তমান)