ভয় দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে কয়েক লক্ষাধিক টাকা
বর্তমান | ২৮ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: ভয় দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সূতির অরঙ্গাবাদ বিদ্যুৎ সাপ্লাই অফিসের স্টেশন ম্যানেজারের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন অভিযোগে প্রথমে গ্রাহকদের কেস দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। পরে কেসের রফার প্রস্তাব দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। রফায় রাজি হাওয়া গ্রাহকদের ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকিদের কেস দেওয়া হয়। দাবিমতো টাকা না দেওয়ায় এক গ্রাহকের বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে তাঁর নামে কেস দেওয়া হয়। ওই গ্রাহক স্টেশন ম্যানেজারের বিরুদ্ধে ডিভিশনাল ম্যানেজারকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি জানাজানি হতেই ভুক্তভোগী গ্রাহকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মোটা অর্থের বিনিময়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে সরব হয়েছেন বাসিন্দারা। তাঁরা অভিযুক্ত স্টেশন ম্যানেজারের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
অভিযুক্ত স্টেশন ম্যানেজার বলেন, যারা বিদ্যুৎ চুরি করে, তাদের ফাইন করা হয়। আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন। বিদ্যুৎ দপ্তরের রিজিওনাল ম্যানেজার কৌশিক মণ্ডল বলেন, এখনও পর্যন্ত আমার কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে, কর্মীদের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
জানা গিয়েছে, দিন দশেক আগে অরঙ্গাবাদ বিদ্যুৎ সাপ্লাই অফিসের স্টেশন ম্যানেজার মেরাজুল শেখ কর্মীদের নিয়ে কলেজপাড়া এলাকায় চেকিংয়ে যান। এলাকায় গিয়ে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের বিষয়টি নজরে আসে। অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ করে টোটো চার্জ করা হত, এমন পাঁচজন গ্রাহকের বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেন। ওই সমস্ত গ্রাহককে পরের দিন অফিসে দেখা করতে বলেন। না হলে তাঁদের বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ আইনে মামলা করা হবে বলে জানান। পরের দিন ওই পাঁচ গ্রাহক অফিসে গেলে স্টেশন ম্যানেজার তাঁর গাড়ির চালক ও বিদ্যুৎ অফিসের কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে কথা বলতে বলেন। ওই কর্মীরা গ্রাহকদের প্রথমে দেড় ও পরে এক লক্ষ টাকা দিয়ে বিষয়টি আপসে মিটিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেয়। বানি ইসরাইল নামে এক গ্রাহক সেই প্রস্তাবে রাজি হননি। বাকিরা সেই প্রস্তাবে রাজি হওয়ায় তাঁদের কেস দেওয়া হয়নি। ওইদিনই তাঁদের বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ জুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু, বানির নামে এফআইআর করা হয়। তাঁর বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগও দেওয়া হয়নি।
বানি বলেন, আমি অন্যায় করেছি আমাকে ফাইন করা হোক। কিন্তু, যারা মোটা টাকা দিয়ে রফা করল তাদের জন্য এক আইন, আর আমি টাকা দিতে পারিনি বলে আরএক আইন কী করে হয়? আমি এই অন্যায়ের বিচার চাই।
সূতি-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি মইদুল ইসলাম বলেন, স্টেশন ম্যানেজার এলাকার বহু গ্রাহকের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়েছে। উনি লাগাতার এই অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া দরকার।