নবদ্বীপের ফরেস্টডাঙা গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা এখনও মাটির, উদাসীন প্রশাসন
বর্তমান | ২৮ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: নবদ্বীপের মাজদিয়া-পানশিলা পঞ্চায়েতের ফরেস্টডাঙা গ্রামের কালীমন্দিরের কাছ থেকে সংস্কৃত কলেজ মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তাটি এখনও কাঁচা রয়েছে। সম্পূর্ণ মাটির এই রাস্তায় বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। অল্পবৃষ্টিতেই গর্তে জল জমে যায়। এমনকি, রাস্তাটির বেশকিছু অংশ ভাগীরথীর ভাঙনে ভেঙে গিয়েছে। ফলে প্রতিদিন ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন ফরেস্টডাঙা গ্রামের প্রায় ৪০০টি পরিবার।
জানা গিয়েছে, নবদ্বীপ ব্লকের মাজদিয়া-পানশিলা পঞ্চায়েতের ফরেস্টডাঙা গ্রামের বাঙালপাড়া, মুসলিমপাড়া, গোঁসাইপাড়া, মাহাতপাড়া সহ পার্শ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্দারা এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। ওইসব এলাকার অধিকাংশ গ্রামবাসী এই রাস্তা দিয়ে গৌরাঙ্গ সেতু হয়ে নবদ্বীপের হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ, থানা এবং নবদ্বীপ ধাম স্টেশনে যান। কৃষ্ণনগরে যেতে হলেও তাঁরা এই রাস্তাটি ব্যবহার করেন। বর্ষার সময় জল বাড়লে মাটির এই রাস্তাটি বেশ কয়েকটি গ্রামের বন্যা প্রতিরোধে বাঁধের কাজ করে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, বছরের পর বছর বাঁধের এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি কাঁচাই থেকে গিয়েছে। বর্ষায় জল-কাদার কারণে এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা দুর্বিসহ হয়ে ওঠে। গ্রামবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি পাকা করার দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু প্রশাসনিক স্তরে বারবার আশ্বাস পেলেও আজ পর্যন্ত রাস্তাটি পাকা হয়নি।
স্থানীয় মালিতাপাড়ার বাসিন্দা পরাণ মালিতা বলেন, রাস্তাটি পাকা করার দাবি দীর্ঘদিনের। রাস্তা পাকা হলে নবদ্বীপ ও কৃষ্ণনগরে যেতে গ্রামবাসীদের খুবই সুবিধা হবে। এখন বেশকিছুটা ঘুরপথে যাতায়াত করতে হচ্ছে। গ্রামের ভিতরের পাকা রাস্তাটিও বিভিন্ন জায়গায় উঁচুনিচু রয়েছে। চাষিদের জমির ফসল নিয়ে যেতে সমস্যা হয়। চৌধুরীপাড়ার বাসিন্দা একাদশ শ্রেণির ছাত্রী রাধিকা চৌধুরী বলে, প্রতিদিনই এই রাস্তা দিয়ে সাইকেল নিয়ে নবদ্বীপের বকুলতলা গার্লস স্কুলে যাই। এই রাস্তার কিছুটা দূরে একটি পিচ রাস্তা আছে। তবে, ওই পিচ রাস্তা দিয়ে যেতে গেলে অনেকটা বাড়তি সময় লেগে যায়। মাটির রাস্তাটি পাকা হলে সময় অনেকটা কম লাগবে।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সুরজ চৌধুরী বলেন, রাস্তাটির বিষয়ে বারবার ব্লক এবং জেলায় জানিয়েছি। জেলা থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, পথশ্রী প্রকল্পে রাস্তাটা তৈরি করে দেওয়া হবে। সেজন্য মাঝে একবার মাপজোকও হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও কাজ হয়নি।
মাজদিয়া-পানশিলা পঞ্চায়েতের শিল্প ও পরিকাঠামো দপ্তরের সঞ্চালক মিঠুন ঘোষ বলেন, গৌরাঙ্গ সেতু থেকে ফরেস্টডাঙা গ্রামে ঢোকার ঢালাই রাস্তাটির নিচ থেকে মাটি সরে গিয়েছে। ওই রাস্তাটি যাতায়াতের পাশাপাশি বন্যা প্রতিরোধে বাঁধের কাজও করে। এই রাস্তার শেষপ্রান্তে কালীমন্দির থেকে সংস্কৃত কলেজের চারমাথার মোড় পর্যন্ত যে মাটির রাস্তাটির অবস্থা খুব খারাপ। আমরা পঞ্চায়েত থেকে দীর্ঘদিন রাস্তাটি পাকা করার জন্য বিডিও এবং জেলা পরিষদে জানিয়েছি। আশা করছি, পথশ্রী প্রকল্পে এই রাস্তাটি তৈরি হয়ে যাবে। -নিজস্ব চিত্র