শাহ-নাড্ডাদের জন্য সেক্টর ফাইভে আরও একটি বহুতল ভাড়া নিল বিজেপি
বর্তমান | ২৮ নভেম্বর ২০২৫
রাজু চক্রবর্তী, কলকাতা: বিধানসভা ভোটের আগে সল্টলেক সেক্টর ফাইভে আরও একটি আস্ত বহুতল ভাড়ায় নিল বঙ্গ বিজেপি। স্বাস্থ্যদপ্তরের হেড কোয়ার্টার স্বাস্থ্যভবনের (জিএন ২৯) ঠিক লাগোয়া একটি বহুতলে আগেই উঠে এসেছিল বিজেপির সদর কার্যালয়। তার ঠিকানা জিএন ২৭, সল্টলেক সিটি। বহরে-কলেবরে বাড়ছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। তাই একটি বহুতলে কুলোচ্ছে না। এজন্যই ওই বাড়ির ঠিক পাশে জিএন ২৬ নম্বরের বহুতল ভবনটি ভাড়ায় নিল বিজেপি। অর্থাৎ স্বাস্থ্যভবনের ঠিক একটি বাড়ি পরেই জোড়া বহুতলে লালিত হবে শাসক দলের নিকটতম রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী। এতদিন জিএন ২৭ রাজ্য অফিস থেকেই বঙ্গ বিজেপির যাবতীয় কার্যকলাপ পরিচালিত হত। ঝাঁ চকচকে কর্পোরেট কায়দার এই অফিস দেখে রীতিমতো সমীহ জাগে। গ্রামগঞ্জের সাধারণ বিজেপি কর্মীরা এই অফিসের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে খানিক অস্বস্তি বোধ করেন। এবার পাশের জিএন ২৬ বাড়িটি নতুন করে সাজানো হচ্ছে। এই মুহূর্তে চলছে চূড়ান্ত পর্বের কাজ।
অমিত শাহ, জেপি নাড্ডারা বাংলায় ভোটের জন্য এলে এই নয়া অফিসে বসেই রণকৌশল সাজাবেন। পাঁচতলা বহুতলের টপ ফ্লোরে চলছে সেই প্রস্তুতি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের নিরাপত্তায় ওই বাড়িটিকে বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে। ঘরের ভিতরের সামান্যতম আওয়াজ বাইরে না আসে, তার জন্য বসছে বিশেষ প্রযুক্তি। ওই ফ্লোরে সবার প্রবেশাধিকার থাকবে না। এক্ষেত্রেও বিশেষ সুরক্ষাবলয় তৈরি হচ্ছে। এছাড়া সেখানে তিনটে গেস্ট রুম বানানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় শাসক দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতা-নেত্রীদের আতিথেয়তায় থাকছে বিশেষ ব্যবস্থা। বাকি তলগুলিতে তৈরি হচ্ছে, কল সেন্টার, স্যোশাল মিডিয়ার অফিস এবং দুই বেসরকারি ভোটকুশলী সংস্থার কর্মীদের ঘর। বিজেপির রাজ্য কমিটির এক নেতা বলেন, ‘দুটি বহুতলের ভাড়া বাবদ বছরে কয়েক কোটি টাকা খরচ হবে বিজেপির। এই মুহূর্তে এত আধুনিক জোড়া বহুতলবিশিষ্ট পার্টি অফিস বাংলায় নেই।’
রাজ্যে ক্ষমতায় না-থেকেই এই প্রাচুর্য! পার্টি কখনও নবান্ন দখল করলে কী হবে, তা ভেবেই পাচ্ছেন না ওই নেতা। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে কলকাতায় হেস্টিংস মোড়ের কাছে একটি বহুতলের একাধিক ফ্লোর ভাড়ায় নিয়েছিল বিজেপি। ২০০ আসন জিতে ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন বাস্তবে ৭৭-এ থেমে যাওয়ার পর সেই বাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে খোদ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আমলে ভাড়ায় নেওয়া মুরলীধর সেন লেনের অফিস ছেড়ে সেক্টর ফাইভে ওঠে আসে বিজেপি পার্টির কার্যালয়। এখন দেখার, ভোটের মুখে আরও একটি বহুতল ভাড়া নেওয়া গেরুয়া শিবিরকে বাড়তি ডিভিডেন্ড দেয় কি না।