• ২০১৭ প্রাথমিকে ভুল প্রশ্ন নিয়ে নয়া সংকট, ওএমআর সিবিআইয়ের কাছে, বাড়তি নম্বর দেওয়া অথই জলে
    বর্তমান | ২৮ নভেম্বর ২০২৫
  • অর্পণ সেনগুপ্ত, কলকাতা: টেট-এ প্রশ্ন ভুল মামলায় আদালতের যুদ্ধে জয়ী হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ২০১৭ এবং ২০২২-এর টেট মিলিয়ে মোট ৪৭টি প্রশ্ন ভুল রয়েছে দাবিতে মামলা করেছিলেন প্রার্থীরা। তবে, টেট ২০১৭’র একটি প্রশ্ন ছাড়া বাকিগুলিতে কোনও ভুল মেলেনি। মামলাকারীদের সব দাবি খারিজ করেছে আদালত নিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের বিশেষজ্ঞ কমিটি। যদিও আইনি লড়াইয়ে জেতার পরও এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতির শিকার হয়েছে পর্ষদ। এখন একটি ভুল প্রশ্নের জন্য এক নম্বর দিতে গেলেও আদালতের দ্বারস্থ হতে হবে তাঁদের। 

    ২০১৭ সালের টেট সংক্রান্ত কোনও নথি আর তাঁদের হাতে নেই বলেই দাবি করেছেন পর্ষদের এক কর্তা। এগুলির তথ্য ছিল চুক্তির ভিত্তিতে ওএমআর শিট মূল্যায়নকারী সংস্থা এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানির কাছে। তবে দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত তদন্তের স্বার্থে সেই তথ্য এখন সিবিআইয়ের হাতে। তাই কারা সেই পরীক্ষায় বসেছিলেন, কারাই বা প্রশ্নটি অ্যাটেম্পট (উত্তর লেখার চেষ্টা) করেছিলেন, সেই তথ্যও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির কাছে রয়েছে। পর্ষদের ওই আধিকারিক বলেন, ‘সিবিআইয়ের কাছে সেই তথ্য চাওয়া যায়। তবে তারা সে তথ্য পর্ষদকে নাও দিতে পারে। সেক্ষেত্রে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে সেই তথ্য চাওয়া ছাড়া কোনও উপায় থাকবে না।’

    প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শুরুর আগে টেট উত্তীর্ণদের থেকে আবেদন গ্রহণ শুরু করেছে পর্ষদ। ১৯ নভেম্বর শুরু হওয়া সেই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার কথা ৯ ডিসেম্বর। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ২০১৭ সালের কোনও প্রার্থী এক নম্বর পেয়ে যদি টেট উত্তীর্ণ হয়েও যান, তাহলে এই পর্বে তিনি আবেদন করতে পারবেন না। সেই আধিকারিক বলেন, ‘সেটা সমস্যা হবে না। এই প্রার্থীদের জন্য ফের আলাদা করে পোর্টাল খোলার বিকল্প তো থাকছেই।’ তবে, গোটা প্রক্রিয়া কবে, কীভাবে শেষ করা যাবে, তা নিয়ে বেশ চিন্তাতেই রয়েছে পর্ষদ।

    একই সমস্যায় এর আগে পড়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। আদালতের নির্দেশে এসএসসির সব তথ্যাদির হেপাজত গিয়েছিল সিবিআইয়ের হাতে। এদিকে, আদালত এসএসসিকে নির্দেশ দিয়েছিল, প্রার্থীদের সমস্ত তালিকা প্রকাশের জন্য। তবে হাতে তথ্য না থাকায় এসএসসি বিপাকে পড়ে। এক্ষেত্রে অবশ্য এত জটিলতা হবে না বলেই মনে করছে পর্ষদ। প্রসঙ্গত, প্রাথমিকে শূন্যপদ রয়েছে ১৩ হাজার ৪২১টি। শুধু টেট ২০২২, টেট ২০২৩’ই নয়, বয়স এবং অন্যান্য যোগ্যতা ঠিক থাকলে এ যাবৎ যত টেট হয়েছে, সেগুলিতে উত্তীর্ণ সব প্রার্থীই আবেদন জানাতে পারবেন। এই বিরাট কর্মকাণ্ডে সমস্যা রয়ে গেল একটিই—এই এক নম্বর দেওয়া।

    পর্ষদকে এখন একাধিক বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। রাজ্যস্তরের স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন, পাশাপাশি নিয়োগ প্রক্রিয়া চালানো, ডিএলএড কোর্সে ভর্তি প্রক্রিয়া, পরীক্ষা গ্রহণ প্রভৃতি। এর পাশাপাশি রয়েছে মামলার চাপ। ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে  যে মামলা রয়েছে, তা নিয়েও আইনি কৌশল ঠিক করতে হচ্ছে। এর পাশাপাশি উটকো সমস্যা নিয়ে বাড়তি চিন্তায় পর্ষদ।
  • Link to this news (বর্তমান)