নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কেরামতি দেখানোর সময় আচমকাই পিস্তল থেকে চলল গুলি। আর তাতেই জখম এক দুষ্কৃতী। বুধবার রাত ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে কসবা থানা এলাকার প্রান্তিক পল্লির খালপাড়ের পাশে। জখম অভিজিৎ নাইয়া নামে এক যুবক। তার বাঁ হাতের তালুতে গুলি লাগে। অভিযোগ, আমদানি করা একটি নাইন এম এম পিস্তল এনে কেরামতি দেখাচ্ছিল অভিজিৎ সর্দার ওরফে বাবাই নামে এক যুবক। আচমকাই পিস্তল থেকে গুলি চলে। বাবাইকে গ্রেফতার করেছে কসবা থানা। যদিও জখম অভিজিৎ নাইয়া পুলিশকে গোটা বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। বলা হয়, মোটর সাইকেল চেপে আসা হেলমেটে মুখ ঢাকা দুই দুষ্কৃতী গুলি চালিয়েছে। তাতেই জখম হয়েছে সে। যদিও টানা জিজ্ঞাসাবাদে শেষ পর্যন্ত বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। দু’জনেই কসবা এলাকার উঠতি এক অপরাধীর গ্যাংয়ের সদস্য বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই অভিজিৎ উঠতি যে গ্যাংয়ের সদস্য, তাদের সঙ্গে কসবা এলাকার এক দাগি অপরাধীর শত্রুতা রয়েছে। পুরোনো ওই অপরাধীর দখলে থাকা এলাকা নিতে মরিয়া নতুন এই গ্যাং। সূত্রের খবর, দুই অভিজিতের গ্যাং লিডার নতুন কিছু আর্মস আমদানি করে। যাতে বিপক্ষের সঙ্গে পাল্লা নেওয়া যায়। যার মধ্যে ছিল নাইন এম এম পিস্তলও। সেই পিস্তলই ‘প্র্যাকটিসে’র জন্য অভিজিৎ সর্দারের হাতে তুলে দিয়েছিল গ্যাং লিডার।
পুলিশ জেনেছে, মঙ্গলবার রাতে দুই অভিজিৎ খালপাড়ে যায়। সঙ্গে ছিল গ্যাংয়ের অন্য সদস্যরা। অন্ধকার খালপাড়ে রাতে পুলিশি পাহারা না থাকায় এই জায়গা বেছে নিয়েছিল তারা। নাইন এম এম পিস্তল কীভাবে ধরতে হবে, কীভাবে গুলি চালাতে হবে, তা দেখাচ্ছিল অভিজিৎ সর্দার। তার পাশেই ছিল অভিজিৎ নাইয়া। পিস্তল নিয়ে দু’জনে নাড়াচাড়া শুরু করে। এই সময় আচমকাই পিস্তল থেকে গুলি চলে যায়। সেটি অভিজিৎ নাইয়ার বাঁ হাতের তালুতে লাগে। সঙ্গে সঙ্গেই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পারে, গুলিতে জখম অবস্থায় এক যুবক ভর্তি হয়েছে। কসবা থানার অফিসাররা সেখানে পৌঁছে যান। জিজ্ঞাসাবাদে অভিজিৎ নাইয়া প্রথমে দাবি করে, মোটর সাইকেলে চেপে এসে বহিরাগত দু’জন তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোতেই এই বিপত্তি। কিন্তু সন্দেহ হয় তদন্তকারীদের। তাঁরা সন্দেহ করেন, কিছু একটা লুকোনোর চেষ্টা করছে আহত যুবক। জিজ্ঞাসাবাদে শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়ে অভিজিৎ নাইয়া জানান, পিস্তল তাদেরই। নাড়াচাড়ার সময় আচমকাই গুলি চলে। তদন্তে উঠে এসেছে, অনুশীলনের পাশাপাশি তা বিক্রির দায়িত্বও দিয়েছিল গ্যাং লিডার।