নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: জনগণনা ভারতের বুকে শেষ কবে হয়েছিল, সেই তারিখ খুঁজতে দ্বারস্থ হতে হয় তথ্য বিশারদদের। তবে সম্প্রতি রাষ্ট্রসংঘের একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। সেটি অন্তত কলকাতাকে খানিক স্বস্তি দেয়। ‘রাষ্ট্রসংঘের ওয়ার্ল্ড আরবানাইজেশন প্রসপেক্ট ২০২৫’ আজ থেকে ২৫ বছর বাদে অর্থাত্ ২০৫০ সালে কলকাতার জনসংখ্যা কত হতে পারে তার একটি রূপরেখা দিয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, বিশ্বের জনবহুল শহরগুলির তালিকায় কলকাতা রয়েছে দশম স্থানে। আর এবছর, অর্থাত্ ২০২৫ সালে বিশ্বের জনবহুল শহরগুলির নিরিখে কলকাতা রয়েছে নবম স্থানে।
এ তো গেল স্থানের হিসেব। কলকাতার জনসংখ্যা আসলে কত? রিপোর্টে প্রকাশ, ২০০০ সালে কলকাতার জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১ কোটি ৮৪ লক্ষ। তখন কলকাতা ছিল পঞ্চম স্থানে। ওই তালিকায় কলকাতার পরে ছিল দিল্লি। দেশের রাজধানীর জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১ কোটি ৮০ লক্ষ। ভারত এবং পৃথিবীর প্রথম ১০টি জনবহুল শহরের মধ্যে কলকাতা ও দিল্লির নাম ছিল। তারপর ২০২৫ সালে কলকাতা নেমে এল নবম স্থানে। জনসংখ্যা হল ২ কোটি ২৫ লক্ষ মতো। আর দিল্লি উঠে এল চতুর্থ স্থানে। জনসংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ২ লক্ষ। এবছরের তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে জাকার্তা (৪ কোটি ১৯ লক্ষ), তারপর ক্রমানুযায়ী ঢাকা, টোকিও, নয়াদিল্লি, সাংহাই, ঘোয়াংঝু, কায়রো, মানিলা, কলকাতা ও সিওল।
এর পাশাপাশি ২০৫০ সালে জনবহুল শহরের তালিকায় কোথায় কে থাকতে পারে তারও একটা সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই তালিকায় ঢাকা প্রথমদিকে উঠে গিয়েছে। আর ২ কোটি ৩৮ লক্ষ জনসংখ্যা নিয়ে কলকাতা নেমেছে দশম স্থানে। রাষ্ট্রসংঘের এই অনুমান বলে দিচ্ছে, ২০০০ সালের পরের ২৫ বছরে শহরের জনসংখ্যা বেড়েছিল প্রায় ৪১ লক্ষের মতো। আর ২০২৫ সাল থেকে পরের ২৫ বছরে জনসংখ্যা বৃদ্ধি হতে পারে প্রায় ১৩ লক্ষ। অর্থাত্ বলাই যায়, জনবিস্ফোরণের আশঙ্কা বিশেষজ্ঞরা প্রায়ই করে থাকেন, সেই আশঙ্কা থেকে কিছুটা হলেও নিস্তার পেতে চলেছে শহর কলকাতা।
ওই রিপোর্টে আরও একটি দিক উঠে এসেছে। ২০২৫ থেকে ২০৫০ সাল পর্যন্ত এশিয়া মহাদেশের ভারত ও চীনের শহরগুলিকে বসবাস করার জন্য বেছে নিয়েছেন বেশিরভাগ মানুষ। ২০২৫ সালে ভারতে জনসংখ্যার ৪৪ শতাংশ শহরাঞ্চলে বসবাস করছেন। চীনে এই সংখ্যা ৪৪ শতাংশ। রুজি-রুটির কারণে গ্রাম খালি করে শহরে বাস করার প্রবণতা বাড়ছে। এই রিপোর্টে সেসব বিষয়েরই প্রতিফলন।