নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড় ডায়মন্ডহারবারে দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বিক্ষোভের পাশাপাশি গো-ব্যাক স্লোগানও শুনতে হয়েছে সুকান্তবাবুকে। যদিও পুলিশের তৎপরতায় অবাঞ্ছিত কোনও ঘটনা ঘটেনি। এই ঘটনায় গেরুয়া শিবিরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এল বলেই মনে করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার উত্তম বাগ নামে এক বিজেপি কর্মীর বাড়িতে গিয়েছিলেন সুকান্তবাবু। ফেরার পথে সরিষার কাছে বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। এদিন যারা বিক্ষোভ দেখিয়েছে, তারা তৃণমূল কর্মী বলে দাবি করেছেন সুকান্তবাবু। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের বক্তব্য, নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এমন ঘটনা ঘটেছে। দায় এড়াতেই তৃণমূলের নাম নেওয়া হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, কয়েক সপ্তাহ আগে ডায়মন্ডহারবারে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন বিজেপির বেশ কিছু নেতা-কর্মী। তার মধ্যে ছিলেন উত্তমবাবুও। তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সময় সরিষা মোড়ের কাছে আচমকাই গেরুয়া উত্তরীয় ও কপালে টিকা লাগানো কয়েকজন যুবক এগিয়ে আসে সুকান্তবাবুর কনভয়ের দিকে। শুরু হয় তুমুল স্লোগান। ‘দিলীপ ঘোষ জিন্দাবাদ’ থেকে শুরু করে ‘জয় শ্রীরাম’ চলে সবকিছুই। বিক্ষোভকারীদের নেতৃত্বে থাকা বিজেপির ডায়মন্ডহারবার সাংগঠনিক জেলা যুব মোর্চার প্রাক্তন সহ-সভাপতি রাজু দাস বলেন, আমরা যখন আক্রান্ত হয়েছিলাম, তখন কেউ আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি। তৃণমূল থেকে আসা লোকজনকে নিয়ে চলছে দল। আমরা দিলীপ ঘোষের অনুগামী। আমরা সুকান্তবাবুর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু উনি কোনও সময় দেননি। তাই এই বিক্ষোভ।
যদিও এ দিনের ঘটনার পিছনে বিজেপির কেউ জড়িত নয় বলেই দাবি করেছেন সুকান্তবাবু। তাঁর বক্তব্য, যে যুবকের নেতৃত্বে এদিন বিক্ষোভ হয়েছে, সে তৃণমূল করে। শুধু গেরুয়া উত্তরীয় আর টিকা লাগিয়ে বিজেপি হওয়া যায় না। তৃণমূলের সাজানো প্ল্যানের পর্দা ফাঁস হয়ে গিয়েছে। সুকান্ত বাবুর এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। তিনি বলেন, বিজেপির এমন দুরবস্থা হয়েছে যে এখন মানুষ ওদের সঙ্গে নেই। ওদের রাজ্য কমিটি তৈরি হয়নি দীর্ঘদিন হয়ে গেল। আমাদের কাছে খবর আছে, রাজ্য কমিটি তৈরিতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমিক ভট্টাচার্যকে বাধা দিচ্ছেন সুকান্তবাবু। বিজেপির কর্মী সমর্থকরা দিশাহীন। গণতান্ত্রিকভাবে বিজেপির কর্মীরা যদি তাঁদের নেতাকে গো-ব্যাক স্লোগান দেন, সেখানে পুলিশ কী করে আটকাবে!