এই সময়: স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২০২৫–এর শিক্ষক নিয়োগ–প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক তরজা ফের চরমে। এসএসসি–র একাদশ–দ্বাদশ ও নবম–দশমের নিয়োগ সংক্রান্ত সব মামলা সুপ্রিম কোর্ট বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে ফেরত পাঠিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, ‘সুপ্রিম কোর্টের এপ্রিলের রায় উপেক্ষা করে রাজ্য সরকার নতুনদের সঙ্গে পুরোনো ‘যোগ্য’দের একসঙ্গে পরীক্ষায় বসতে বাধ্য করেছে। গোটাটাই হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনামাফিক। শীর্ষ আদালত ২০১৬–র চাকরিহারা যোগ্যদের নতুনদের সঙ্গে একসঙ্গে পরীক্ষা নিতে বলেনি।’
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু অবশ্য এই দাবিকে আমল দেননি। তাঁর কথায়, ‘এই রকম কোনও অর্ডার সুপ্রিম কোর্ট দেয়নি। এই বিষয়ে তাই কথা বলে লাভ নেই। পর্যবেক্ষণ নিয়ে মন্তব্য করব না।’ ব্রাত্যর সংযোজন, ‘শীর্ষ আদালতের নির্দেশে বলা হয়েছে, নতুন নিয়োগ বিধি যাতে চাকরিহারা যোগ্যদের ক্ষেত্রে কোনও প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করে, সেটা হাইকোর্টকে দেখতে হবে। রাজ্য সরকার ওঁদের অভিজ্ঞতার জন্যে আগেই ১০ নম্বর বরাদ্দ করেছে।’
শুভেন্দুর দাবি, ‘সুপ্রিম কোর্ট নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা হাইকোর্টে ফেরত পাঠিয়ে সঠিক কাজ করেছে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিরা রাজ্যের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্ক বিস্তারিত খোঁজখবর রাখেন। এ রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ–দুর্নীতির পাশাপাশি রেশন এবং একশো দিনের কাজে দুর্নীতির বিষয়টিও হাইকোর্টের বিচারপতিরা প্রথম ধরেছেন।’ এসএসসি এবং প্রাথমিকে নিয়োগ–দুর্নীতি ধরার জন্যে তিনি তমলুকের বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কেও কৃতিত্ব দেন।
এ প্রসঙ্গে ব্রাত্যর মন্তব্য, ‘বিচারপতি যদি সওয়াল–জবাব করেন, তা হলে তার একটা উত্তর দেওয়া যেতে পারে। আমি মনে করি না বিচারক–ভেদে বা কোর্ট–ভেদে আইন পাল্টায়। যদি কোনও বিচারকের কোনও রাজনৈতিক পক্ষপাত বা অভিসন্ধি থাকে, সেটা আমরা আগেই দেখেছি। কিন্তু সব বিচারপতির ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য বলে মনে করি না। ফলে কে কোথায় মামলা করছেন জানি না। অনেকে ভাবতেই পারেন যে এ বার হাইকোর্টে এসেছে। কিন্তু তাতে খুব বদল হবে বলে মনে করি না। আমি বিশ্বাস করি এ ভাবে বিচার বদলে যায় না। কারণ এটা আইনের ব্যাপার। বিরোধীরা যদি বলে ধন্দ আছে, আমরা সেটা মানতে রাজি নই।’
ব্রাত্যর বরং দাবি, ‘বিরোধীরা চেষ্টা করবেই যাতে তৃণমূল সরকার কাউকে নিয়োগ করতে না পারে। সেটা বিরোধীদের কাজ। আমাদের কাজ স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ দেওয়া। আমরা সেটাই করছি। আমাদের ক্ষমতাচ্যুত করার রাজনৈতিক অভিসন্ধি থাকতেই পারে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ করতে চাইছেন। আমাদের কাজ, সেটা নিশ্চিত করা।’