• ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব, জাঁকিয়ে ঠান্ডা কি ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে
    এই সময় | ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • এই সময়: ডিসেম্বর পড়ে গেলেও দক্ষিণবঙ্গে তেমন ঠান্ডা পড়েনি। শীত ও দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে বঙ্গোপসাগরে জমে ওঠা জলীয় বাষ্পের পুরু স্তর। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ না কাটলে ওই স্তর সরার কোনও লক্ষণ দেখছেন না আবহবিদরা। ফলে মন চাইলেও ‘জাঁকিয়ে ঠান্ডা’–র আমেজ পেতে আরও অন্তত একটা সপ্তাহ অপেক্ষা করতেই হবে বাংলাকে।

    দেশের উত্তর–পশ্চিম দিক থেকে ক্রমাগত ঢুকতে থাকা ঠান্ডা ও শুকনো বাতাসের প্রবাহে উত্তর ও উত্তর–পশ্চিম ভারতের তাপমাত্রা অতি দ্রুত হারে নামতে শুরু করেছে। শনিবার শেষ রাতে (ক্যালেন্ডার মতে রবিবার) পাঞ্জাবের ফরিদকোটের তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল দু’ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

    মৌসম ভবন জানাচ্ছে, ওই দিন ফরিদকোট ছিল দেশের সমতলের মধ্যে শীতলতম স্থান। ইতিমধ্যেই রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং মধ্যপ্রদেশে শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা জারি হয়েছে। কিন্তু, দেশের উত্তর ও উত্তর–পশ্চিম প্রান্ত যে ভাবে জড়সড় হয়ে গিয়েছে শীতের কামড়ে, তার কোনও ছোঁয়াচই এখনও পর্যন্ত পায়নি বাংলা। এর জন্য দায়ী ঘূর্ণিঝড় ‘দিতওয়াহ’।

    দক্ষিণ–পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই ঘূর্ণিঝড় প্রথম বার শ্রীলঙ্কার উপরে ল্যান্ডফল করার পরে তার শেষাংশ দ্বীপরাষ্ট্রের উপর দিয়ে গিয়ে সমুদ্রের উপর পড়ার পরে ফের শক্তি বাড়িয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশ সীমানা বরাবর ল্যান্ডফল করার সম্ভাবনা খুব বেশি। আবহবিদরা মনে করছেন, ল্যান্ডফলের পরেই যে ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাব পুরোপুরি কেটে যাবে, এমন নয়।

    ল্যান্ডফলের পরেও বঙ্গোপসাগরের ওই অঞ্চল ও সংলগ্ন অঞ্চলে প্রচুর জলীয় বাষ্প জমে থাকবে। যতক্ষণ জলীয় বাষ্পের ওই স্তর বাতাসে ভেসে থাকবে, ততক্ষণ উত্তর–পশ্চিম ভারতের ঠান্ডা বাতাসের স্রোত দেশের পূর্ব উপকূল পর্যন্ত আসতে পারবে না। আবহবিদরা মনে করছেন, ডিসেম্বরের ৫ থেকে ৭ তারিখের পরে জলীয় বাষ্পের স্তর ক্রমশ পাতলা হবে। তার পরেই দক্ষিণবঙ্গে ‘প্রকৃত’ শীতের অনুভূতি পাওয়া যাবে।

    এই প্রসঙ্গে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ রবীন্দ্র গোয়েঙ্কা বলেন, ‘এখন কলকাতা–সহ দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জায়গাতেই ‘ছদ্ম শীত’ চলছে। এটা এমন একটা পরিস্থিতি যখন রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক বা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি থাকে। তবে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা হলেও কম থাকে। বঙ্গোপসাগরের অস্থিরতা কমলেই ধীরে ধীরে দক্ষিণবঙ্গের রাতের তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে। তবে তার জন্য ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’

  • Link to this news (এই সময়)