বাড়তি টাকায় স্লিপার ক্লাসেও মিলবে চাদর-বালিশ, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যে উদ্যোগী রেল
বর্তমান | ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ট্রেনের সাধারণ নন-এসি স্লিপার ক্লাসে সফর করলে যাত্রীদের মালপত্রের মধ্যে একটি ‘কমন’ থাকবেই। বালিশ এবং চাদর। কারণ, এই ক্লাসের যাত্রীদের ‘বেডরোল’ দেয় না রেল। এসি ক্লাসের রেল যাত্রীদের অবশ্য এহেন বাড়তি ঝামেলা সহ্য করতে হয় না। ট্রেনে উঠে সিটেই তাঁরা পেয়ে যান একটি করে ‘বেডরোল কিট’। এনিয়ে বিভিন্ন সময় রেলমন্ত্রকের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগও তুলেছে যাত্রীদের একাংশ। সেই সমালোচনা বন্ধ করতে অবশেষে উদ্যোগ নিল রেল। সূত্রের খবর, বাড়তি টাকার বিনিময়ে ট্রেনের স্লিপার ক্লাসেও মিলবে চাদর এবং বালিশ। তবে ভাড়ায়। অর্থাৎ, টাকা দিয়ে পরিষেবা নিলেও ট্রেন থেকে নামার সময় সেই বেডরোল ফেরত দিতে হবে দায়িত্বপ্রাপ্ত অন-বোর্ড রেলকর্মীদের। নন-ফেয়ার রেভিনিউ স্কিমে (অর্থাৎ, যাত্রীভাড়া না বাড়িয়ে বিকল্প পথে আয়) আপাতত শুধুমাত্র দক্ষিণ রেলের চেন্নাই শাখায় পাইলট প্রোজেক্ট হিসেবে এই ব্যবস্থা শুরু হচ্ছে নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে। এহেন পাইলট প্রোজেক্ট সফল হলে পর্যায়ভিত্তিতে দেশের প্রত্যেক জোন এবং ডিভিশনেই বাড়তি টাকায় স্লিপার ক্লাসের যাত্রীদের বেডরোল দেওয়া শুরু করবে রেল। রবিবার এমনই জানানো হয়েছে রেল বোর্ডের শীর্ষ সূত্রে।
বাড়তি টাকার পরিমাণ কত? দক্ষিণ রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, একাধিক ক্যাটিগরিতে স্লিপার ক্লাসের যাত্রীদের চাদর, বালিশ দেওয়া হবে। কোনও যাত্রী যদি শুধু বেডশিট নেন, তাঁকে দিতে হবে ২০ টাকা। যদি কোনও যাত্রী শুধু কভার সহ বালিশ নেন, সেজন্য দিতে হবে ৩০ টাকা। কেউ পুরো ‘কিট’ নিতে চাইলে দিতে হবে ৫০ টাকা। রেল জানিয়েছে, স্লিপার ক্লাসের যাত্রীদের ট্রেনে উঠে এ ব্যাপারে জানাতে হবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের।
প্রাথমিকভাবে স্থির হয়েছে, চেন্নাই ডিভিশনের ১০টি মেল, এক্সপ্রেস ট্রেনে এই পরিষেবা শুরু হবে। সেগুলি হল নীলগিরি সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, চেন্নাই-ম্যাঙ্গালোর সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, চেন্নাই এগমোর-মান্নারগুড়ি এক্সপ্রেস, চেন্নাই এগমোর-তিরুচেন্দুর সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, চেন্নাই-পালঘাট এক্সপ্রেস, চেন্নাই এগমোর-সেনগোট্টাই সিলাম্বু সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, তাম্বারাম-নাগেরকয়েল সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, চেন্নাই-তিরুবনন্তপুরম সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, চেন্নাই-আলেপ্পি সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস এবং চেন্নাই এগমোর-ম্যাঙ্গালোর এক্সপ্রেস। ইতিমধ্যেই বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থাকে এ কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে পরবর্তী তিন বছরের জন্য।
করোনাকালে ট্রেন পরিষেবা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ার সময় এসি ক্লাসের যাত্রীদের জন্যও এ ব্যবস্থা শুরু করেছিল রেল। অর্থাৎ, বেডরোল কিনতে হত তাঁদের। যাত্রা শেষে তা নিয়ে যেতে পারতেন তাঁরা। পরে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ফেরে এসি ক্লাসে। কিন্তু নন-এসি স্লিপার ক্লাসের যাত্রীরা তখনও এভাবেই টাকার বিনিময়ে চাদর, বালিশ ‘ম্যানেজ’ করার চেষ্টা করতেন। আয় বাড়াতে যাত্রীদের সেই ‘উৎসাহ’ই ভরসা রেলের।