• কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র পাইয়ে দেওয়ার নামে ‘ধোঁকা’, ৩ লক্ষ ‘হাতিয়ে’ গ্রেফতার সিভিক
    বর্তমান | ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত ও সংবাদদাতা, বসিরহাট: সাম্প্রতিক অতীতে রাজ্যে একের পর এক অপরাধের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ারদের। কোনও কোনও ক্ষেত্রে তাঁরাই মূল অভিযুক্ত। ফের গুরুতর অভিযোগ উঠল এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। রবিবার ছিল রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগের পরীক্ষা। সেই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র আগেভাগে পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে একাধিক চাকরিপ্রার্থীর থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে এক সিভিককে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম গণেশ বাছার। শনিবার গভীর রাতে বসিরহাটের তাঁতিপাড়ার বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে বসিরহাট থানা। বিষয়টি নিয়ে জেলার পুলিশ সুপারের কাছেও অভিযোগ এসেছিল। সব মিলিয়ে প্রতারণার পরিমাণ প্রায় ৩ লক্ষ টাকা বলে এখনও পর্যন্ত জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। রবিবার ধৃতকে বসিরহাট আদালতে তোলা হলে বিচারক ছ’দিনের পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই ঘটনার সঙ্গে আর কারও যোগ আছে কি না, জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। বসিরহাট জেলার পুলিশ সুপার হোসেন মেহেদি রহমান বলেন, ‘ইতিমধ্যে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করা হয়েছে। পিছনে কোনও চক্র রয়েছে কি না, আমরা তদন্ত করে দেখছি।’

     পুলিশ সূত্রে খবর, বছর ৩০-এর গণেশের বাড়ি বসিরহাট পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তাঁতিপাড়ায়। বসিরহাট থানাতেই তিনি সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে কর্মরত। সম্প্রতি এলাকায় নিজেকে ‘প্রভাবশালী’ প্রমাণ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। তাঁর সঙ্গে পুলিশের শীর্ষ মহলের যোগাযোগ আছে বলে জাহির করে বেড়াতেন। তাঁর এই কর্মকাণ্ড নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে অভিযোগ আসছিল পুলিশের কাছে। পুলিশ তখন নিজস্ব সোর্স মারফত খোঁজখবর শুরু করে। জানা যায়, রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগের পরীক্ষার প্রশ্ন আগেভাগে পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে বসিরহাটের কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা তুলেছেন গণেশ। কিন্তু পরীক্ষা যত এগিয়ে আসছিল, ততই তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছিলেন। তাই আগাম প্রশ্ন পাওয়ার জন্য তাঁকে টাকা দেওয়া কয়েকজনের সন্দেহ হয়। তাঁরা কয়েকজন পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। বসিরহাট থানার পুলিস একাধিক চাকরিপ্রার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাঁদের বয়ানেই সামনে আসে সিভিকের কীর্তি! এরপরেই গ্রেফতার করা হয় গণেশকে। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সম্প্রতি এলাকায় প্রভাব বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন কথা বলতেন গণেশ। ফর্ম পূরণের পর্ব শেষ হতেই তিনি ‘টার্গেট’ ঠিক করে ফেলেছিলেন। সেই মতো প্রশ্নপত্র আগাম পাইয়ে দেওয়ার ধোঁকা দিতে শুরু করেন। তদন্তে ইতিমধ্যেই টাকা নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। তবে মোট কত টাকা এবং তা কতজনের কাছ থেকে তোলা হয়েছিল, তার পুরো হিসেব এখনও হাতে আসেনি বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। ধৃতকে দফায় দফায় জেরা করে এসব তথ্য জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। সূত্রের খবর, এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বসিরহাট থানার এক কনস্টেবলকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)