• থ্যালাসেমিয়া রুখতে বার্তা মেয়ের বিয়ের মণ্ডপে, রক্তদানও
    আনন্দবাজার | ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • স্বামী-স্ত্রী থ্যালাসেমিয়া বাহক। তাঁদের দুই কন্যা। বড় মেয়ে থ্যালাসেমিয়া বাহক। ছোট মেয়ে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত। ছোট মেয়ের রক্ত জোগাড়ে হিমশিম খেতে হয়েছে কোনও কোনও সময়। তাই বড় মেয়ের বিয়ের মণ্ডপেই হল রক্তদান শিবির ও থ্যালাসেমিয়া সচেতনতার বার্তা। ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের আলমপুর গ্রামে রবিবার বিয়ের মণ্ডপ হয়ে উঠেছিল সচেতনতা শিবির।

    বিয়ের আয়োজনের শুরু থেকেই সচেতনতার পরিকল্পনা করেছিলেন পাত্রীর বাবা-মা। বিয়ের কার্ডেও রক্তদানের পাশাপাশি থ্যালাসেমিয়া সচেতনতার বার্তা দেওয়া হয়েছে। সেই কার্ডে উল্লেখ করা রয়েছে, বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা অবশ্যই করান। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভুবনচন্দ্র হাঁসদা বলেন, ‘‘জনসমাজে যদি এ রকম মানুষজন সচেতন থাকেন তা হলে খুবই ভাল। ভল বললেও কম বলা হবে। এ ধরনের উদ্যোগ মানুষজনকে আরও সচেতন করে তুলবে।’’

    গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রাম আলমপুরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ প্রধান ও তাঁর স্ত্রী সুনীতা থ্যালাসেমিয়া বাহক। ২৩ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। সেই সময়ে বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করা প্রয়োজনীয়তার কথা প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষজন জানতেন না। সেই ভুল ভাঙে পরে। যখন তাঁর প্রথম মেয়ে পিউ থ্যালাসেমিয়া বাহক এবং ছোট মেয়ে শ্রেয়া থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত বলে পরীক্ষায় ধরা পড়ে। জন্মের পর থেকেই শ্রেয়ার রক্তের প্রয়োজন হয়। তা জোগাড় করা কষ্টকর। বড় মেয়ে পিউয়ের বিয়ে হচ্ছে ওই ব্লকের বাকড়া গ্রামে। বিয়ের আগে পাত্রের থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করানো হয়েছে।

    রবিবার মেয়ের গ্রামের বাড়িতেই বিয়ের আয়োজন হয়েছিল। বিয়ের মণ্ডপে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। শিবিরের সহায়তায় ছিল সুবর্ণরৈখিক ভাষা চর্চা বিষয়ক গোষ্ঠী ‘আমারকার ভাষা আমারকার গর্ব’। প্রধান দম্পতি এই গ্রুপের সদস্য। ছ’জন মহিলা-সহ মোট ২৫ জন রক্ত দেন। এঁদের মধ্যে ন’জন নতুন রক্তদাতা। পাত্রী পক্ষের পরিবারের সাত জন রক্ত দেন। তাঁদের মধ্যে মেয়ের মামা অমিত হাটুই ও মামিমা উমা রক্ত দিয়েছেন। সুবর্ণরৈখিক ভাষা গ্রুপের সদস্য তন্ময় বক্সী এদিন ৫২তম রক্ত দেন।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)