বাচ্চা কার কাছে থাকবে তা নিয়ে টোটোর মধ্যে শুরু হয়েছিল অশান্তি। এক সময় বাবা এবং মায়ের মধ্যে তিন মাসের মেয়েকে নিয়ে টানাহেঁচড়া শুরু হয়। প্রথমে কাঁদছিল শিশুটি। তবে কিছু ক্ষণের মধ্যে দম্পতি দেখেন, সে সাড়াশব্দ করছে না। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, ডাক্তার শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। শনিবার রাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের শয়লা গ্রামের ওই ঘটনায় শিশুর বাবাকে আটক করেছে পুলিশ। এসডিপিও (ঘাটাল)দুর্লভ সরকার বলেন, ‘‘ময়না তদন্ত হয়েছে। বাবাকে আটক করা হয়েছে। মা-ও পুলিশি নজরদারিতে রয়েছেন। তদন্ত চলছে।’’
বছর চারেক আগে দাসপুর থানার মাগুরিয়া গ্রামের দিনমজুর যুবকের সঙ্গে হাওড়ার ভাটোরার বাসিন্দা যুবতীর বিয়ে হয়। ঘাটাল শহরে ভাড়াবাড়িতে থাকতেন দম্পতি। মাস তিনেক আগে তাঁদের মেয়ে হয়। স্থানীয় সূত্রের দাবি, সন্তানের জন্মের পরে স্ত্রীকে মারধর করে বার করে দেন স্বামী। মেয়েকে নিয়ে দাসপুরের গোপীগঞ্জে এক পরিচিতের বাড়িতে ছিলেন যুবতী।
শনিবার স্ত্রীকে ঘাটালে আসতে অনুরোধ করেন স্বামী। মেয়েকে নিয়ে টোটোয় চেপে আসছিলেন স্ত্রী। দাসপুরের শয়লার কাছে দু’জনের দেখা হয়। টোটো চালক পুলিশকে জানিয়েছেন, সন্তান কার কাছে থাকবে তা নিয়ে কথা কাটাকাটির মাঝেই শিশুর দু’হাত ধরে ওই দম্পতি টানাটানি শুরুকরেন। শিশুটি কান্নাকাটি করলেও তাঁরা থামেননি। পরে শিশুটির সাড়াশব্দ মেলেনি।
সোনাখালি গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসা শুরুর আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়। শনিবার রাতে হাসপাতালে ছিলেন তার মা। এ দিন তাঁকেও থানায় আনা হয়। তবে রবিবার রাত পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ হয়নি। পুলিশের অনুমান, বাচ্চাটিকে টানাটানি করতে গিয়ে বেমক্কা চোটলেগে এমন কাণ্ড হয়ে থাকতে পারে। বাচ্চাটির বাবা বলেন, ‘‘মেয়েকে আমার কাছে রাখতে চেয়েছিলাম। স্ত্রী না দেওয়ায় জোর করে নিতে গিয়েছিলাম।’’ মায়ের দাবি, ‘‘মেয়েকে কোলে আঁকড়ে রেখেছিলাম। এ রকম হবে ভাবিনি!’’