দেশ ও বিদেশে তুলাইপাঞ্জির বাণিজ্য বাড়াতে উদ্যোগী রাজ্য
বর্তমান | ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, রায়গঞ্জ: জিআই ট্যাগপ্রাপ্ত তুলাইপাঞ্জি চালকে দেশ এবং দেশের বাইরে ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগী রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, শিল্প ও উদ্যানপালন বিভাগ। উত্তর দিনাজপুর জেলার মাটির ফসল এই চালের সুগন্ধ ও স্বাদ দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে দিতে ইতিমধ্যে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দপ্তর সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী ফর্মুলেশন মাইক্রো ফুড প্রসেসিং এন্টারপ্রাইজের (পিএমএফএমই) অধীনে তুলাইপাঞ্জি চালকে নথিভুক্ত করা হয়েছে।
জেলার দুই কৃষকগোষ্ঠী এই প্রকল্পের অধীনে কাজও শুরু করেছেন। রায়গঞ্জের বাসিন্দা মনসুর হাবিবুল্লা ও কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা বিলাল রহমান এই প্রকল্পের অধীনে ডিটেইল প্রজেক্ট রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরির কাজ শুরু করেছেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে তুলাইপাঞ্জি চালকে দেশ ও বিশ্বের বাজারের জন্য অ্যাডভার্টাইজিং, প্যাকেটিং ও ব্র্যান্ডিং করা হবে।
জেলার পিএমএফএমই-এর নোডাল অফিসার অনীক মজুমদার বলেন, কেন্দ্রের সঙ্গে কথা চলছে। ডিপিআর তৈরি করতে বলা হয়েছে দুই গোষ্ঠীকে। ডিপিআর তৈরির পর রাজ্যের সম্মতি মিললেই খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রকে পাঠানো হবে।
দেশ ও বিশ্বের বাজারে এই তুলাইপাঞ্জি চাল পৌঁছে গেলে লাভবান হবেন জেলার কৃষকরা। মনসুর হাবিবুল্লা বলেন, এতদিন রাজ্য সরকারে মাধ্যমে আমরা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এই চাল পৌঁছে দিয়েছি। বর্তমানে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা যুক্ত হতে চলেছি। কেন্দ্রীর কমিটির সঙ্গে ভার্চুয়ালি কথাও হয়েছে। ডিপিআর তৈরির কাজ চলছে। নিয়ম অনুযায়ী আমার গোষ্ঠীর অধীনে ন্যূনতম ৫০ জন কৃষককে রাখতে বলা হয়েছে, যাঁরা তুলাইপাঞ্জি চাল প্রস্তুত করে থাকেন। এতে তাঁরাও লাভবান হবেন। বিলাল রহমান বলেন, আমরা এই প্রজেক্টের অধীনে কাজ শুরু করেছি। ডিপিআর পাঠানোর পর কেন্দ্রের তরফ থেকে সাড়া পেলেই কাজ শুরু হবে।
একসময় রায়গঞ্জের মোহিনীগঞ্জে তুলাইপাঞ্জি ধানের চাষ হতো। কিন্তু ধীরে ধীরে রায়গঞ্জ ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় এই ধানের চাষ শুরু হয়। রাজ্যে এখন ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে তুলাইপাঞ্জি চাল। বিপুল উৎপাদন বাড়লে এই চালের মান কমে যাবে না তো? কৃষকরা বলছেন, এই চাষে রাসায়নিক সার বা ওষুধ ব্যবহার করা হয় না। মাটির প্রকৃতির নিরিখে এই চালের স্বাদ কিছুটা ভিন্ন। তবে স্বাদ একইরকম রাখতে বিশেষ খেয়াল রাখা হয়। সেজন্য জৈব সার ব্যবহার করা হয়। যদিও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী চালে ভেজাল মিশিয়ে বাজার নষ্ট করার চেষ্টা করছে বলে তুলাইপাঞ্জি ধানের কৃষকরা জানান।