• 'গোটা পৃথিবীতে আমরা আছি, আমরা আদিবাসীরা এদেশের রাজা, SIR ফর্ম ফিল-আপ করব কেন!'
    ২৪ ঘন্টা | ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • মৃত্যুঞ্জয় দাস: মাঝি সরকারে আস্থা। দেশের নাগরিকত্ব প্রমাণের দায় নেই দাবি করে এস আই আর ফর্ম পূরণ করতে অস্বীকার করলেন বেশ কয়েকটি আদিবাসী পরিবার। ঘটনা বাঁকুড়ার রানীবাঁধ ব্লকের রাওতোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের। এই ঘটনায় রীতিমত অস্বস্তিতে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন ও পুলিস। গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে ওই ফর্ম পূরণের চেষ্টা চালানো হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। 

    নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে বাঁকুড়া জেলাতেও চলছে এস আই আর প্রক্রিয়া। আর সেই প্রক্রিয়া চলাকালীন এবার ব্যতিক্রমী মোড়। বাঁকুড়ার রানীবাঁধ ব্লকের রাওতোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ভেদুয়াশোল-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের সুনির্দিষ্ট কিছু আদিবাসী পরিবার নিজেদের 'সমাজবাদ অন্তঃরাষ্ট্রীয় মাঝি সরকার'-এর অন্তর্ভূক্ত দাবি করে এনুমারেশান ফর্ম পূরণ করতে অস্বীকার করেছেন। তাঁদের দাবি আদিকাল থেকে এদেশের জল, জমি ও জঙ্গলের মালিক তাঁরা। পরবর্তীতে অন্য দেশ থেকে এদেশে এসে নাগরিক হওয়া মানুষদের নাগরিকত্ব প্রমাণের দায় থাকলেও এস আই আর এর মাধ্যমে নাগরিকত্ব প্রমাণের দায় তাঁদের নেই।

    নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের অনেকে প্রাথমিকভাবে স্থানীয় বিএলও র কাছ থেকে এনুমারেশান ফর্ম নিলেও সেই ফর্ম পূরণ না করেই তা জমা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর এতেই চরম অস্বস্তিতে পড়েছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে এনুমারেশান ফর্ম পূরণ করানোর চেষ্টা চালানো হবে বলে জানিয়েছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন।

    তৃণমূলের দাবি ওই আদিবাসী মানুষদের ভুল তথ্য দিয়ে কেউ বা কারা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে। দলও বিষয়টির উপর কড়া নজর রেখেছে। বিজেপির তরফেও মোটামুটিভাবে একই দাবি করা হয়েছে। বিজেপির দাবি ওই পরিবারগুলি নিশ্চিতভাবেই ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে। এই ধরনের মত যারা ছড়াচ্ছে তারা দেশবিরোধী ভাবনা মানুষের মধ্যে ঢোকানোর চেষ্টা করছে।

    স্থানীয় যুবক রামজীবন হাঁসদা বলেন, বিএলআরও এসআইআর ফর্ম দিয়েছিল। সেই ফর্ম আমরা পূরণ করিনি। আগে আমরা আমাদের আদিবাসীদের অধিকার জানতাম না। পরে জানলাম আমরা এদের রাজা লোক। আমরা আদিবাসীরা ভারতে আছি। আমাদের বলা হচ্ছে ভারত আমাদের দেশ। কিন্তু গোটা পৃথিবীতে বিষুব রেখার দুই পারে আদিবাসীদের ৫টি অঙ্গরাজ্য রয়েছে। আমরা ভারতে বাস করছি। আদিবাসীরা এখানকার মূলবাসী মানুষ। যারা ভোট দিচ্ছে তারা এই আদিবাসীদের সেবা করার জন্য রয়েছে। ওদের ক্ষেত্রে এসআইআর হতে পারে। আমাদের ক্ষেত্রে নয়। আমরা আদিবাসী, মূলবাসী, এদেশের রাজা। আমাদের ভোটার কার্ড, আধার কার্ডের প্রয়োজন নেই। আধিবাসীরা চাকরের কাজ করবে না। যারা করবে তাদের প্যান-আধার লাগবে। যারা অন্তঃরাষ্ট্রীয় মাঝি সরকারে আসতে চায় তাদের চাকরিতে রিজাইন দিয়ে আসতে হবে। ভোটার, আধার স্যারেন্ডার করতে হবে। মাঝিরা চাকরি করবে না। ওরা রাজা লোক।  

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)