এসআইআর নিয়ে কমিশনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কমিশনের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল সাংসদ। সোমবার ডায়মন্ড হারবারে সেবাশ্রয়-২-এর উদ্বোধনে যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকেই নির্বাচন কমিশনকে একহাত নেন তিনি।
গত শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করতে যান তৃণমূলের ১০ সাংসদের এক প্রতিনিধি দল। সেখান থেকেই শুরু হয় সংঘাতের সূত্রপাত। ওই দিন রাতেই একাধিক সূত্রে কমিশনকে উদ্ধৃত করে দাবি করা হয়, তৃণমূল কংগ্রসকে কড়া বার্তা দিয়েছে কমিশন। আইন মানতেই হবে, তৃণমূলকে স্পষ্ট দিয়েছে কমিশন।
Advertisement
তৃণমূল যাতে কোনও ভাবেই বিএলও-দের চাপ না দেয় তাও প্রতিনিধিদলকে জানিয়েছে কমিশন, এমনটাই দাবি করা হয়। অভিষেক সেদিনই বৈঠকের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশের দাবি করেন। শনিবার ডেরেক ওব্রায়েন একই সুরে বৈঠকের পূর্ণাঙ্গ কথোপকথন প্রকাশের দাবি জানান। আর সোমবার অভিষেক দাবি করলেন, তাঁর হাতে ডিজিটাল প্রমাণ রয়েছে। তবে সেটা কী ধরনের প্রমাণ, তা স্পষ্ট করেননি ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ।
গত শুক্রবার, এসআইআর আতঙ্কে বিএলও-সহ নাগরিকদের মৃত্যু এবং পরিকল্পনাহীনতার মতো পাঁচটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলছিল তৃণমূলের ১০ সাংসদের প্রতিনিধি দল। কমিশন একটি প্রশ্নেরও সুদত্তর দেয়নি বলে বৈঠকের পর দাবি করে তৃণমূল কংগ্রেস। সোমবার সেই বিতর্কে আরও এক ধাপ এগিয়ে অভিষেক বলেন, ‘পাঁচটা প্রশ্ন ছেড়ে দিন। কমিশন যদি প্রকাশ করতে পারে, একটি প্রশ্নেরও জবাব তারা দিয়েছে, তা হলে টানতে টানতে কোর্টে নিয়ে যাব। আমাদের হাতে ডিজিটাল এভিডেন্স রয়েছে। আমি হাওয়ায় কথা বলি না।’
কমিশন সূত্রে শুক্রবার বলা হয়েছিল, বিএলও এবং ইআরও-দের অতিরিক্ত ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত নবান্নকেও জানানো হয়েছিল। নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ওই ভাতার অর্থ নবান্ন বরাদ্দ করেনি বলে অভিযোগ কমিশনের। সোমবার নিজের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে স্বাস্থ্যশিবির ‘সেবাশ্রয় ২’ উদ্বোধনের পর মহেশতলায় কমিশনের উদ্দেশে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করেন অভিষেক।
তিনি বলেন, ‘বাংলার যে বকেয়া রয়েছে, সে ব্যাপারে কমিশন চিঠি লিখুক কেন্দ্রীয় সরকারকে। বকেয়া অর্থের ৫০ শতাংশ কেন্দ্র দিলে বিএলও-দের অ্যাকাউন্টে ৬০ হাজার টাকা করে দেবে রাজ্য সরকার।’ এর পরে তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্রকে টাকা দিতে হবে না। বাংলার প্রাপ্য দেওয়ার কথা বলে কমিশন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেও বিএলও-দের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পৌঁছে যাবে।’
রাজ্যের বকেয়া টাকা নিয়ে নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রকে চিঠি লিখতে পারে কি না তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এই ধরনের বিষয় কমিশনের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে কি না তা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, কমিশন যে তা করতে পারে না, সেটা অভিষেক জানেন। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা কমিশন এবং কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে এক সারিতে ফেলে রাজনৈতিক ভাষ্য তৈরি করতে চাইছেন অভিষেক।