স্বাদে-গুণে অতুলনীয়, জিআই ট্যাগ অর্জন দার্জিলিংয়ের ম্যান্ডারিন কমলালেবুর
প্রতিদিন | ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: তিন বছর অপেক্ষার পর অবশেষে জিআই ট্যাগ অর্জন করল স্বাদে-গুণে অতুলনীয় দার্জিলিং পাহাড়ের ম্যান্ডারিন কমলালেবু। মিরিক ও দার্জিলিং পাহাড়ে উৎপাদিত সুস্বাদু ও রসালো ম্যান্ডারিন কমলালেবুর জিআই ট্যাগের চেষ্টা শুরু হয়েছিল ২০২২ সালে। পাহাড়ের কমলা উৎপাদক সংস্থা ‘দার্জিলিং অরেঞ্জ গ্রোয়ার্স প্রডিউসার অর্গানাইজেশন’-এর চেয়ারম্যান মনোজ সুব্বার নেতৃত্বে এই কাজ শুরু হয়েছিল। এরপর কালিম্পংয়ের আঞ্চলিক কমলালেবু গবেষণা কেন্দ্রের প্রাক্তন অধ্যাপক তুলসী শরণ ঘিমিরে উদ্যোগ নেন। পরীক্ষা নিরীক্ষার কয়েকটি ধাপ পার হয়ে ২৪ নভেম্বর জিআই স্বীকৃতি দেওয়া হয়। খবর ছড়িয়ে পড়তেই খুশি পাহাড়ের মানুষজন, চাষি থেকে ব্যবসায়ীরা।
দার্জিলিং পাহাড়ে কমলালেবুর চাষ মূলত হয়ে থাকে মংপু, মিরিক বস্তি, সুখিয়াপোখরি, বিজনবাড়ি, সিটংয়ে। এখন অবশ্য বিজনবাড়ি ব্লকে খুব সামান্য কমলালেবু বাগান রয়েছে। বেশিরভাগ রোগে নষ্ট হয়েছে। একই পরিস্থিতি মিরিক ও সুখিয়াপোখরি এলাকার। ২০১৬ সালে দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় ১৫ হাজার মেট্রিক টন কমলালেবু উৎপাদন হয়েছিল। গত ১৫ বছরে ভাইরাস ও পোকার আক্রমণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি শুরু হয়। উৎপাদন কমে। আগে পাহাড়ে ৯৩০ হেক্টর জমিতে লেবুর চাষ হত। এলাকাও কমে। ফলে চাষিরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েন। দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার প্রায় চার হাজার কৃষক এখনও কমলালেবু চাষের সঙ্গে যুক্ত। জিআই স্বীকৃতি পেয়ে তাঁরা অথারাইসড ইউজারের স্বীকৃতি পাবেন। তাঁদের উৎপাদিত ফলের সঠিক মূল্য পাওয়ার অধিকার থাকবে। রাজ্যের মোট ১১টি কৃষি ও উদ্যানজাত পণ্য জিআই মর্যাদা পেয়েছে। যার মধ্যে প্রথমটি দার্জিলিং চা। সেটি ২০০৫ সালে জিআই ট্যাগ পায়। দার্জিলিং পাহাড়ের ম্যান্ডারিন কমলালেবু স্বাদে, গুণে অতুলনীয়। বিদেশেও সমাদৃত। কয়েক বছর আগে থেকে ম্যান্ডারিনের জিআই ট্যাগের দাবি উঠছিল। অবশেষে এই স্বীকৃতিতে উচ্ছ্বসিত পাহাড়বাসী৷
প্রাক্তন অধ্যাপক তুলসী শরণ ঘিমিরে জানান, জিআই ট্যাগের সার্টিফিকেট কিছুদিনের মধ্যে চলে আসবে। এমন সাফল্যে খুশি দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা। তিনি বলেন, “ম্যান্ডারিন কমলালেবু জিআই ট্যাগ পেয়েছে এটা খুবই খুশির খবর। এর আগে পাহাড়ে ডোলে খোরসানি লঙ্কা জিআই ট্যাগ পেয়েছে। আগামীতে পাহাড়ের দারচিনি, আদা, ইসকাস পাল্ম, রাই শাক একইভাবে যেন জিআই ট্যাগ পায় সেই চেষ্টা চলছে।”