• পাইকারি থেকে দোকানে পৌঁছোতে লাফিয়ে বাড়ছে দাম, ওষুধ কিনতে নাভিশ্বাস, কাঠগড়ায় মোদি সরকার
    বর্তমান | ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সমৃদ্ধ দত্ত, নয়াদিল্লি: একটি অ্যান্টি অ্যালার্জিক ওষুধ স্টকিস্ট এবং ডিস্ট্রিবিউটররা কেনে ১ টাকা ৮৫ পয়সায়। সাধারণ মানুষের কাছে সেই ওষুধ বিক্রি হয় ২১ টাকায়! একটি নির্দিষ্ট ওষুধের কম্পোজিশন পাইকারি ব্যবসায়ী কিনেছেন ১১ টাকা ২৫ পয়সায়, আর সেটাই দোকানে বিক্রি হচ্ছে ১১৪ টাকায়। অ্যাসিডিটি, গ্যাসের একটি ওষুধ... যা স্টকিস্ট কিনে থাকেন ১৩ টাকা ৯৫ পয়সায়, সেটির এমআরপি ১৭০ টাকা। ধরা যাক ক্যালসিয়াম কার্বোনেটের মতো এসেনশিয়াল সাপ্লিমেন্ট। তার একটি ব্র্যান্ডের স্টকিস্ট প্রাইস ১৬ টাকা ৯৫ পয়সা। আর এমআরপি? ৩২৭ টাকা! কাফ সিরাপ থেকে ডায়াবেটিস। হাইপারটেনশন অথবা লাইফস্টাইল ডিজিজ। মার্জিন কোনও ক্ষেত্রে ১০৩৮ শতাংশ, কোথাও ১২৭২ শতাংশ। ওষুধ নিয়ে লুটপাট চলছে। সাধারণ মানুষ রীতিমতো দিনে ডাকাতির শিকার হয়ে চলেছে। প্রতিদিন। উদাহরণ তুলে ধরে এই রিপোর্ট দাখিল করেছে খোদ সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি। সোমবার লোকসভায় পেশ হওয়া রিপোর্টে জানা যাচ্ছে, পাইকারি বিক্রেতারা যে দামে কোম্পানির থেকে ওষুধ কিনছেন, খুচরো বিক্রেতা হয়ে সাধারণ মানুষের কাছে সেই ওষুধই যখন পৌঁছোচ্ছে, তার দাম বেড়ে গিয়েছে কয়েকশো গুণ। স্ট্যান্ডিং কমিটির সরাসরি প্রশ্ন, সরকার করছেটা কী? অবিলম্বে এর সুরাহা করতে হবে। 

    সোমবার সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনেই লোকসভায় পেশ করা হয়েছে সার ও রাসায়নিক মন্ত্রক সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্ট। রিপোর্টের শিরোনামই হল, প্রাইস রাইজ অব মেডিসিনস ইন দ্য ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টর ইমপ্যাক্টিং দ্য লাইভস অব অর্ডিনারি সিটিজেনস অ্যাডভার্সলি। তাতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, বিখ্যাত ওষুধ সংস্থাগুলির ব্র্যান্ডের দামের তারতম্য আকাশছোঁয়া। স্টকিস্টরা সরাসরি কোম্পানি থেকে যে দামে ওষুধ কেনে, তাকে বলা হয় প্রাইস টু স্টকিস্ট (পিটিএস)। আর খুচরো বিক্রেতারা সেই ওষুধ যে দামে কিনে নিজেদের ফার্মাসিতে নিয়ে আসেন, তার নাম প্রাইস টু রিটেলার। এই দুই ধাপ পেরিয়ে সেই ওষুধ যখন সাধারণ মানুষের কাছে আসছে, এমআরপি আগের দামের ধারেকাছে নেই। এই প্রাইস টু স্টকিস্ট থেকে এমআরপি পর্যন্ত কয়েকধাপে ওষুধের দামে এত বেশি ফারাক কেন? কারা বিপুল মুনাফা লুটছে? সাধারণ মানুষের কথা তো ভাবাই হচ্ছে না! ওষুধ কিনতে গিয়ে তাদের এভাবে নাভিশ্বাস উঠে যাওয়ার দায় কেন সরকার নেবে না? স্টকিস্টরা কোম্পানি থেকে যে মূল্যে ওষুধ কিনছে, সেই তুলনায় সাধারণ মানুষের কাছে আসা ওষুধের দাম এত বেশি হবে কেন? এই বিষয়ে অবিলম্বে একটি কঠোর নীতি গ্রহণ করতে হবে বলে মত প্রকাশ করেছে স্ট্যান্ডিং কমিটি। বলা হয়েছে, ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটির (এনপিপিএ) সঙ্গে আলোচনা করে একটি ট্রেড মার্জিন র‌্যাশনালাই঩জেশন পলিসি তৈরি করা দরকার। অর্থাৎ একটি ওষুধের ব্র্যান্ডে স্টকিস্ট ও রিটেলাররা কতটা মুনাফা রাখতে পারবেন, সেটা পলিসি অনুযায়ী নির্ধারণ করতে হবে। সাধারণ মানুষকে সস্তায় ওষুধ পাইয়ে দিতে হবে দ্রুত। স্ট্যান্ডিং কমিটির অভিযোগ, সবথেকে বড় চক্র চলছে স্টেন্ট নিয়ে! স্টেন্টের দাম এত বেশি কেন?
  • Link to this news (বর্তমান)