• ১০০ অস্থায়ী কর্মীকে বসিয়ে দিচ্ছে পুরসভা, কাজে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ কৃষ্ণনগরে
    বর্তমান | ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: কৃষ্ণনগর পুরসভার ১০৬জন অস্থায়ী কর্মীকে ছাঁটাই করা হল। সেই তালিকায় রয়েছেন নির্মলবন্ধু ও দৈনিক মজুরির কর্মীরা। অভিযোগ, এই শতাধিক কর্মী কর্মক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। তাঁদের নিয়োগও নিয়ম মেনে হয়নি। পুরসভা থেকে মাইনে পেলেও নেতাদের ছত্রছায়ায় থাকতেই তাঁরা পছন্দ করতেন। তাই এই কর্মীদের পাকাপাকিভাবে বসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পুর কর্তৃপক্ষ। সোমবার থেকে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। কৃষ্ণনগর সদর মহকুমা শাসক তথা পুরসভার প্রশাসক শারদ্বতী চৌধুরী বলেন, অনেকেই নিষ্ক্রিয় ছিলেন। সঠিক নিয়ম মেনে তাঁদের নিয়োগ করা হয়নি। সেজন্য শতাধিক কর্মীকে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

    এতজন কর্মীকে বসিয়ে দেওয়ায় এদিন পুরসভায় অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা করা হয়েছিল। সেজন্য কোতোয়ালি থানার তরফে পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়। তবে তেমন কিছু হয়নি। ভবিষ্যতে এধরনের আরও কিছু কর্মীকে ছাঁটাই করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

    কৃষ্ণনগর পুরসভায় ১৩২৬জন কর্মী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে অনেক নির্মলবন্ধু, দৈনিক মজুরির কর্মীকে পুরসভার নানা কাজে সহায়তার জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল। এবার সেই কর্মীদের মধ্যে ১০৬জনকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ৬১জন নির্মলবন্ধু ও বাকি ৪৫জন দৈনিক মজুরির কর্মী।

    বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কৃষ্ণনগর পুরসভার চেয়ারপার্সন রীতা দাসকে অপসারণ করেছিলেন তৃণমূল কাউন্সিলারদের একাংশ। তার কিছুদিনের মধ্যেই রীতাদেবীর বিরোধী গোষ্ঠীর কাউন্সিলাররা পুরসভার রাশ হাতে পান। তখনও বেশ কিছু কর্মীকে বসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। অভিযোগ ওঠে, বেছে বেছে প্রাক্তন চেয়ারপার্সনের ঘনিষ্ঠদেরই কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

    এরপর অচলাবস্থা ও নাগরিক পরিষেবার ঘাটতি নিয়ে রাজ্য সরকারের কোপে পড়ে কৃষ্ণনগর পুরবোর্ড। কয়েকমাস আগে নগরোন্নয়ন দপ্তর পুরবোর্ড ভেঙে সদর মহকুমা শাসককে প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দেয়। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তিনি শহরে আবর্জনা সাফাইয়ের কাজে বিশেষ জোর দিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসক দেখতে পান, অনেক কর্মীর শুধু খাতায়-কলমে অস্তিত্ব আছে। প্রতি মাসে তাঁরা মাইনে পান। কিন্তু বাস্তবে তাঁদের কাজ করতে দেখা যায় না। অর্ধেকের বেশি সাফাইকর্মী নিয়মিত কাজে আসেন না। আবার অনেকে খাতায়-কলমে হাজিরা দিলেও মাঠে নেমে কাজ করেন না। দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে শহরের নেতাদের ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকতেই তাঁরা স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। এবার সেই কর্মীদের ছাঁটাই করা হল।

    এবিষয়ে প্রাক্তন চেয়ারপার্সন রীতা দাস বলেন, ২০২২সাল থেকে ৮৫জন কর্মী অবসর নেওয়ায় তাঁদের জায়গায় নতুন কর্মী নেওয়া হয়েছিল। তার আগে যে নিয়োগ হয়েছে, সেবিষয়ে আগের বোর্ড বলতে পারবে। পুরসভার টাকার অভাবের কথা বলা হচ্ছে। তাহলে আমি এতদিন কীভাবে পুরসভা চালিয়েছি? আমার সময় প্রতিবছর কর্মীদের মাইনে বেড়েছিল। বলা হচ্ছে, রবিবার ও ছুটির দিনের মাইনে দেওয়া হবে না। তাহলে তো সরকারি নিয়মে কর্মীদের যে টাকা পাওয়ার কথা, সেটা দেওয়া হচ্ছে না।
  • Link to this news (বর্তমান)