• পরিকাঠামোর অবস্থা করুণ, পর্যটক আসতে চাইছে না সাঁতুড়ির বড়ন্তিতে
    বর্তমান | ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রঘুনাথপুর: পুরুলিয়ার সাঁতুড়ি থানার বড়ন্তি পর্যটন কেন্দ্র থেকে পর্যটকরা মুখ ফেরাচ্ছেন। কারণ বেহাল পরিকাঠামো। অন্তত ১০ বছর ধরে এই পর্যটন কেন্দ্রের উন্নয়নে নতুন কোনও কাজই হয়নি। বড়ন্তি যাওয়ার রাস্তার হাল বেহাল। সন্ধ্যা নামলেই পর্যটন কেন্দ্রের চারপাশে অন্ধকার নেমে আসে। পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই। তাই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে পর্যটক ও বিভিন্ন গেস্ট হাউসের মালিকরাও সরকারি প্রশাসনের কাছে নজরদারির আবেদন জানিয়েছেন। রঘুনাথপুরের মহকুমা শাসক বিবেক পঙ্কজ বলেন, পর্যটন কেন্দ্রটির বিষয়ে বিস্তারিত খতিয়ে দেখা হবে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাঁতুড়ি থানা এলাকায় ঘুরতে আসা পর্যটকদের আকর্ষণের মূলেই বড়ন্তি (রামচন্দ্রপুর) পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। বর্তমানে বড়ন্তিতে নির্ভর করে একটি ইকো টুরিজম (গেস্ট হাউস), ওয়াচ টাওয়ার গড়ে উঠেছে। সরকার পরিচালিত গেস্ট হাউস বাদে এই এলাকায় ৩০টির বেশি বেসরকারি গেস্ট হাউসও রয়েছে। তবে ১০-১২ বছর আগে পর্যটন কেন্দ্রটির যে ছবি ছিল বর্তমানে সেই একই অবস্থায় রয়েছে বড়ম্তি। তাই ঘুরতে আসা পর্যটকদের মুখে একাধিক সমস্যা ও পরিকল্পনার কথা শোনা গিয়েছে।

    বিধাননগর থেকে বড়ন্তি ঘুরতে আসা পর্যটকদের মধ্যে অনসূয়া কবিরাজ, শ্যামল ঘোষরা বলেন, নিতুড়িয়ার সুভাষ রোড হয়ে বড়ন্তি এসেছি। আসার পথে মুরাডি বাজার থেকে পর্যটন কেন্দ্র পর্যন্ত পিচ রাস্তার অবস্থা তো শোচনীয়।

    আসানসোলের ভারতী দেবী, আকাশ সরকাররা বলেন, সূর্যাস্ত দেখার জন্য বড়ন্তি এসেছিলাম। কিন্তু সানসেট দেখার পর সন্ধ্যা নামতেই ওই এলাকা ঘন অন্ধকারে ঢেকে যায়। পর্যটকদের জন্য অন্তত জলাধারের চারপাশে আলোর ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন। শুধু তাই নয়, পিকনিক স্পট হলেও এলাকায় পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। অন্তত জলাধারের চারপাশে কয়েকটি জলের ট্যাপ দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

    কয়েকজন পর্যটকের দাবি, জলাধারটি প্রায় ২ কিমি লম্বা। ফলে হেঁটে দেখতে খুব অসুবিধা হয়। যদি জলাধারের দু’দিকে কিছু জায়গায় বসার জন্য সিমেন্টের চেয়ারের ব্যবস্থা করে দেওয়া হত তাহলে সুবিধা হয়। এছাড়া এখানে কোনও বোটিংয়ের ব্যবস্থা নেই। পাশাপাশি পার্কিং জোন না থাকায় প্রচুর সমস্যা হয়। কয়েকটি বেসরকারি গেস্ট হাউসের মালিকরা বলেন, একসময় প্রশাসনের তরফ থেকে জলাধারের চারপাশে সোলার লাইট লাগানো হয়েছিল। কিন্তু সেগুলি এখন আর নেই। রাস্তাঘাট পুরোপুরি বেহাল। তার উপর আদ্রা ডিভিশনের ঘন ঘন ট্রাফিক ব্লকে লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকায় আগের মতো পর্যটকরাও এখন আসছে না বড়ন্তিতে।

    সাঁতুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি রামপ্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, মুরাডি বাজার থেকে বড়ন্তি পর্যটন কেন্দ্র পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তার কাজের টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। জেলাকে শীঘ্রই কাজ শুরুর জন্য বলা হয়েছে। জলাধারের লাইটের বিষয়টি দেখা হচ্ছে। বাকি সমস্যাগুলির সমাধানের জন্য পর্যটন দপ্তরে জানানো হবে।  বড়ন্তি থেকে মুখ ফেরিয়েছেন পর্যটকেরা। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)