• বেকারি নিয়ে বিবাদে জগৎবল্লভপুরে দুষ্কৃতী তাণ্ডব, বোমাবাজিতে জখম ৫
    বর্তমান | ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: পুরোনো বিবাদকে কেন্দ্র করে বেকারিতে বহিরাগত দুষ্কৃতীদের হামলায় আতঙ্ক ছড়াল জগৎবল্লভপুরে। রবিবার গভীর রাতে পোলগুস্তিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সমিতির বাঁধ এলাকায় সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে বেকারির মালিক সহ পাঁচজন গুরুতর আহত হন। দুষ্কৃতীরা দোকানে ঢুকে বেধড়ক মারধর করার পাশাপাশি এলাকায় বোমাবাজিও চালায় বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ফলে এলাকাজুড়ে অস্বস্তি ও ভয় আরও বেড়েছে।

    জানা গিয়েছে, এলাকায় বহু পুরোনো একটি বেকারি রয়েছে। আরামবাগের মলয়পুরের বাসিন্দা আখতার আলি মল্লিক দীর্ঘদিন ভাড়া নিয়ে ওই বেকারি চালাতেন। তবে দোকানি ও মালিকের মধ্যে বিবাদের জেরে কয়েক বছর আগে ওই বেকারি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর অন্য জায়গা থেকে পাঁউরুটি, বিস্কুট সহ নানা সামগ্রী এনে ওইখানে বসেই বিক্রি করতেন আখতার। অভিযোগ, রবিবার রাতে হঠাৎই বহিরাগত কয়েকজন দুষ্কৃতী দোকানে চড়াও হয়। দোকানে থাকা এক ক্রেতার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। এরপর আখতার ও অন্যান্যরা পালাতে গেলে তাঁদের লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়।

    আখতার আলি মল্লিক বলেন, ‘দুষ্কৃতীদের কাউকেই চিনি না। আচমকা এসে ভাঙচুর ও মারধর শুরু করে। কয়েকজন রক্তাক্ত হন।’ আক্রান্তদের আমতা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অন্তত ৩০-৩৫ জনের সশস্ত্র দুষ্কৃতী দল ওই রাতে পুরো এলাকায় তাণ্ডব চালায়। বোমা ছুড়তে ছুড়তে তারা বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে বেরিয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাতেই জগৎবল্লভপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। পোলগুস্তিয়া পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ নিজাম বলেন, বেকারি নিয়ে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা চলছিল। তিনি বলেন, ‘দু’মাস আগে বৈঠকে ঠিক হয়, তিন বছর পর দোকান ছাড়বেন ভাড়াটিয়া। দু’পক্ষই সই করে। তারপরেও গ্রামে এভাবে দুষ্কৃতী হামলা উদ্বেগজনক।’ স্থানীয় সূত্রের দাবি, কাউগাছির বাসিন্দা শেখ সফিউল্লা ওরফে বোলাই এবং তার দুই ছেলে শেখ খুরশিদ আলম ও শেখ গালিব ইসলাম বাইরে থেকে দুষ্কৃতীদের এনে এই হামলা চালিয়েছে।

    ঘটনার পর আতঙ্কে দিনভর এলাকার দোকানপাট বন্ধ ছিল এদিন। পুলিশ একাধিকবার টহল দিলেও রাস্তায় লোকজনের আনাগোনা ছিল কম। দুষ্কৃতীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা। হাওড়া গ্রামীণ পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। খুনের চেষ্টা, অস্ত্র নিয়ে হামলা, বোমাবাজি সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে।’ এদিন বিকেলে বেকারি আবার খুললেও দোকানের আসল মালিকের খোঁজ মেলেনি।
  • Link to this news (বর্তমান)