দূষণ ‘চেম্বারে’ স্বস্তি মাত্র ২ দিন, শীতের শুরুতে নভেম্বরজুড়ে দমবন্ধ কলকাতার
বর্তমান | ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শীত পড়তে শুরু করেছে নভেম্বর থেকেই। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খারাপ হয়েছে কলকাতার বাতাসের মান। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য বলছে, নভেম্বর মাসে মাত্র দু’দিন স্বস্তিতে নিশ্বাস ফেলতে পেরেছে কলকাতাবাসী! অর্থাত্, মাত্র দু’দিন বাতাসে দূষণের সূচক (একিউআই) ৫০-এর মধ্যে ছিল। সেই দু’টি দিন হল ১ ও ২ নভেম্বর। এই মাসের বাকি দিনগুলিতে কখনও খারাপ, কখনও চলনসই অবস্থায় থেকেছে বাতাসের গুণমান। স্বভাবতই সর্দি-কাশি-শ্বাসকষ্টে দুর্ভোগ বেড়েছে মানুষের।
নভেম্বরের প্রথম দু’দিন শহরের গড় একিউআই ছিল ৪৭ ও ৪৯। মোট সাত দিন ২০০ ছাড়িয়ে যায় একিউআই। এই সূচক সবচেয়ে বেশি ছিল ২৩ নভেম্বর (২৫৬)। আর ডিসেম্বরের ১ তারিখে একিউআই ছিল ২১৫, যা মোটেই স্বস্তিদায়ক নয়। অর্থাত্, শীত পড়তে না পড়তেই শহর কলকাতা কার্যত ‘গ্যাস চেম্বার’-এ পরিণত হয়েছে বললে অত্যুক্তি হয় না।
কলকাতা শহরে একিউআই মাপার জন্য মোট সাতটি স্টেশন রয়েছে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী, যাদবপুর এলাকার একিউআই গোটা নভেম্বর মাসে একদিনও ‘গ্রিন জোন’-এ ছিল না। বালিগঞ্জ, বিধাননগর, রবীন্দ্র সরোবর, ফোর্ট উইলিয়াম, ভিক্টোরিয়া, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের একিউআই মাসে মাত্র ২ থেকে ৩ দিন ভালো অবস্থায় ছিল। গুরুতর বিষয় হল, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল চত্বরে এই মাসের ৫ দিন একিউআই ছিল ‘রেড জোনে’। অর্থাত্ ৩০০ ছাড়িয়ে গিয়েছিল সূচক। এমনকি, সোমবারও এই এলাকার একিউআই ৩০০ ছাড়িয়েছে। যাদবপুর চত্বরের একিউআই নভেম্বর মাসে চার দিন ৩০০ ছাড়িয়েছিল। পরিবেশকর্মীরা বলছেন, এটা ভয়ানক পরিস্থিতি। এমনকি, ময়দান চত্বরে সকালে হাঁটতে যাওয়া শহরবাসীর বক্তব্য, ‘মাঝেমধ্যে মাস্ক ব্যবহার করতে হচ্ছে। চারদিক কেমন যেন ধোঁয়াশায় ভরে রয়েছে। এই ধোঁয়াশা শুধু যে সকালের দিকে হচ্ছে, এমন নয়। সারা দিনই এমন একটা ধূসর চাদরে ঢাকা রয়েছে ময়দান চত্বর।’ এই পরিস্থিতিতে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় জল ছিটিয়ে রাস্তা ভেজাতে দেখা গিয়েছে প্রশাসনকে।
পরিবেশকর্মী নব দত্ত বলছিলেন, ‘ভিক্টোরিয়া, ময়দান চত্বরে এখন প্রচুর মানুষ যাচ্ছেন। যানবাহন বেড়ে গিয়েছে। ফলত, বায়ু দূষণ বাড়তেই থাকছে। সাধারণ মানুষ এখনও বিষয়টি নিয়ে সিরিয়াস নয়। কিন্তু এর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে তাদেরই। বিত্তশালীরা তো গাড়িতে চেপে চলাফেরা করেন। তাই তাঁদের জীবনে এর খুব একটা প্রভাব পড়ে না। তাছাড়া দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদও এ বিষয়ে উদাসীন।’