• ১৪ জেলায় পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে ইভিএমের, এসআইআর সমাপ্তির অপেক্ষা, ভোট প্রস্তুতির শেষ পর্বে কমিশন
    বর্তমান | ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • শুভঙ্কর বসু, কলকাতা: এসআইআর শেষের অপেক্ষা! তারপরই রাজ্যে বেজে যাবে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের দামামা। আর সেই লক্ষ্যেই প্রথম পর্যায়ের ভোট প্রস্তুতি প্রায় সেরে ফেলল নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই রাজ্যের ১৪টি জেলায় প্রথম পর্যায়ের ইভিএম পরীক্ষার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকি জেলাগুলিতেও শীঘ্রই এই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে জানা গিয়েছে। 

    কমিশন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদীয়া, কোচবিহার, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, পুরুলিয়া সহ মোট ১৪টি জেলায় প্রথম পর্যায়ের ইভিএম পরীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি রাজ্যজুড়ে এই কাজ শেষের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হলেও তাঁর আগেই রাজ্যের সর্বত্র কমিশন এই কাজ সেরে ফেলতে চাইছে বলে সূত্রের খবর। বর্তমানে রাজ্যে ৮০ হাজার ৬৮১ বুথ রয়েছে। এসআইআরের পর রাজ্যে প্রায় ১৪ হাজার বুথ বাড়তে চলেছে। অর্থাৎ ২০২৬ সালের নির্বাচনে রাজ্যজুড়ে ৯৪ হাজারের কিছু বেশি সংখ্যক বুথ থাকবে। সমস্ত বুথে ভোট করাতে প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার ইভিএম প্রয়োজন (৩০ শতাংশ সংরক্ষণ বা রিজার্ভ সহ ব্যালট ইউনিট ও কন্ট্রোল ইউনিট মিলিয়ে)। সঙ্গে লাগবে সম সংখ্যক ভিভিপ্যাটও। এই যাবতীয় উপকরণ এই মুহূর্তে রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরের অধীনে রাজ্যের বিভিন্ন স্ট্রংরুমে মজুত রয়েছে। যেহেতু ভোট সংগঠিত করতে গেলে ইভিএম ও ভিভিপ্যাটই প্রথম জরুরি উপরকরণ, তাই এসআইআর চলাকালীন নভেম্বরে ইভিএম ভিভিপ্যাটের প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষা বা ফার্স্ট লেভেল চেকিংয়ের কাজ শুরু করেছিল কমিশন। 

    ইতিমধ্যেই ১৪টি জেলায় রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে স্ট্রং রুমগুলি খোলা হয়েছে এবং প্রথম পর্যায়ের ইভিএম পরীক্ষার কাজ শেষ। যেহেতু ইভিএমগুলি বিভিন্ন রাজ্যের নির্বাচনে কাজে লাগানো হয়, তাই সেগুলি কাজ করার যথাযথ অবস্থায় রয়েছে কি না, প্রথমেই তা পরীক্ষা করে দেখা হয়। এছাড়াও ব্যালট ও কন্ট্রোল ইউনিট ঠিকঠাক কাজ করছে কি না এবং ভিভিপ্যাটের কাগজ ও ছবি সঠিকভাবে ডিসপ্লে হচ্ছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হয়। এছাড়াও একটি ইভিএমের মোট ১৬টি বোতামে মোট ৯৬ বার ভোটদান করা হয়। কারণ একটাই—দেখে নেওয়া, বোতামগুলি কাজ করছে কি না। এছাড়াও ইভিএম ডিসপ্লে জিরো অর্থাৎ, শূন্য থেকে শুরু হচ্ছে কি না, সেটাও দেখা হয়। প্রথম পর্যায়ে আপাতত এসব কাজই সেরে ফেলা হয়েছে। তাছাড়া এবার নির্বাচন কমিশনের তরফে জারি করা নয়া নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিটি প্রার্থীর দলীয় প্রতীকের পাশাপাশি প্রার্থীর ছবিও থাকবে ইভিএমে। কোথায় কীভাবে সেই ছবি থাকবে বা সেগুলি ইভিএমের বোতামের পাশে নির্ধারিত কোন জায়গায় দেওয়া হবে, তাও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রত্যেক জেলাশাসক বা জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের তত্ত্বাবধানে ইভিএমের প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষার কাজ হয়েছে। কমিশনের এক আধিকারিকের কথায়, ইভিএমের প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষা ভোট প্রস্তুতির প্রাথমিক কাজ হিসেবে গণ্য করা হয়। এই কাজের উপরই পরবর্তী প্রস্তুতি অনেকাংশে নির্ভর করে।  

    রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এসআইআর শেষের পরই নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে দেবে কমিশন। ঠিক যেমনটা হয়েছিল বিহারে। তাই এসআইআরের পাশাপাশি এখন থেকে ভোট প্রস্তুতির কাজ শেষ না করে রাখলে পরে বেগ পেতে হবে। সেকথা মাথায় রেখেই প্রথম পর্যায়ের ভোট প্রস্তুতি দ্রুত সেরে ফেলতে চাইছে কমিশন।
  • Link to this news (বর্তমান)