• ছাব্বিশেও বিজেপির ‘স্টিয়ারিং’ বহিরাগত নেতাদের হাতে! দলের মধ্যেই বাড়ছে ক্ষোভ
    প্রতিদিন | ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • স্টাফ রিপোর্টার: চলতি মাস থেকেই কার্যত ভিন রাজ্যের অবাঙালি নেতারদের ঘেরাটোপে চলে যাবে বঙ্গ বিজেপির সংগঠন। মণ্ডল-জেলা থেকে রাজ্যস্তরে সংগঠন ও প্রচার পর্ব সবই দেখবেন ভিনরাজ্যের নেতারাই। তাদের হাতেই পুরো ‘স্টিয়ারিং’। কিন্তু একুশের ভোটে বিপর্যয়ের পর রাজ্য বিজেপির মধ্যে প্রশ্ন উঠে ছিল, বাংলার নির্বাচনে অবাঙালি নেতৃত্বের মনিটরিং আদৌ দলকে কতটা সাফল্য দেবে? বাংলার মানুষের মন আদৌ কতটা বুঝতে সমর্থ হবেন ভিন রাজ্যের নেতারা? আর এবার ছাব্বিশের ভোটের আগে ফের দলের আদি শিবিরের নেতা-কর্মীরা এই প্রশ্ন তুলছে। গেরুয়া শিবিরের বড় অংশের মধ্যেই সংশয়, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ফের একবার কার্যত সম্পূর্ণ নির্বাচনী দায়িত্ব অবাঙালি নেতাদের হাতে তুলে দিয়েছে। ভিন রাজ্যের নেতারা কি বাংলার মানুষের মন
    বুঝতে পারবে।

    সূত্রের খবর, দলের কোনও পদে না থাকলেও বর্তমানে রাজ্য বিজেপির নির্বাচনী রণকৌশল থেকে প্রতিটি পদক্ষেপ ঠিক করছেন কে কে উপাধ্যায়। রাজস্থানের নেতা, পরে উত্তরপ্রদেশে কাজ করা এই সংগঠক দিল্লির নেতাদের কাছে ‘ভরসার মানুষ’ বলেই পরিচিত। অমিত শাহ থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের জেলা সফর-সব কিছুর সময়সূচি তৈরি করছেন তিনি।

    দলের এক রাজ্য নেতার বক্তব্য, রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো ছাড়াই বহু সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন এই কেন্দ্রীয় নেতা। ফলে, স্থানীয় নেতৃত্ব কার্যত তাঁর উপরেই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। আবার সুনীল বনশল, অমিত মালব্য এবং মঙ্গল পাণ্ডে দলের সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা এই তিনজনই ভিন রাজ্যের নেতা। নতুন করে নির্বাচনী কমিটির মাথায় বসানো হয়েছে ভূপেন্দ্র যাদব এবং ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে।

    ফলে বিজেপির অন্দরে বড় অংশের প্রশ্ন, “বাংলার রাজনৈতিক বাস্তবতা না জেনে হঠাৎ করেই বাইরে থেকে আসা কিছু নেতার নির্দেশে চলতে হচ্ছে দলকে। পাশাপাশি ভিন রাজ্যের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রী চলতি মাস থেকেই রাজ্যে এসে যাচ্ছেন। বিভিন্ন জোন ভিত্তিক তাঁরা আসবেন। একেবারে মণ্ডল স্তর পর্যন্ত তাঁরা নির্বাচনী দায়িত্বে থাকবেন। অন্ধ্রপ্রদেশ-দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ-মধ্যপ্রদেশ-ছত্তিশগড়, উত্তরাখণ্ড, হিমাচলপ্রদেশ, কর্নাটক থেকে নেতারা আসছেন ভোট সামলাতে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবীণ বিজেপি নেতা বলেন, “আমরা নিজের রাজ্যে পরজীবীর মতো লড়াই করব, আর অন্য রাজ্য থেকে আসা নেতৃত্ব ছড়ি ঘোরাবেন-এ কথা মেনে নেওয়া কঠিন। বাংলার রাজনীতি, বাংলার মানুষের মন বুঝতে হবে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)