• এক ব্যক্তি, দুই ঠিকানা! নজরে শহরের ২ ওয়ার্ড
    এই সময় | ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • এই সময়: তাঁরা সম্পত্তির কর দেন এক ঠিকানায়। তাঁদের বাড়ির ‘পোস্টাল অ্যাড্রেস’ আবার ভিন্ন। কলকাতা পুরসভার সংযোজিত এলাকার ৪৪টি ওয়ার্ডের একটি বড় অংশের বাসিন্দারা এই নিয়ে জটিলতায় ভুগছেন। অভিযোগ, জোড়া ঠিকানার জন্য এই এলাকার অনেক বাসিন্দাকে পুরসভার মিউটেশন করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ফলে অনেকের মিউটেশন দিনের পর দিন আটকে থাকে। হয় চূড়ান্ত ভোগান্তি।

    শহরের পূর্ব প্রান্তে ইএম বাইপাস লাগোয়া রুবির মোড় থেকে নিউ গড়িয়া এবং পঞ্চসায়র পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা নিয়ে গঠিত কলকাতা পুরসভার ১০৮ এবং ১০৯ নম্বর ওয়ার্ড। দুই ঠিকানা নিয়ে সমস্যা মূলত এই এলাকাতেই দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কাছে এর সমাধানের আবেদন জানান ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের পঞ্চসায়র লাগোয়া এলাকার এক বাসিন্দা।

    সমস্যার কথা স্বীকার করে নেন ফিরহাদ। তিনি বলেন, ‘১০৮ ও ১০৯ নম্বর ওয়ার্ড আয়তনে বিশাল। বাইপাসের পাশ থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের গ্রামীণ এলাকায় মিশে যাচ্ছে। এই সব জায়াগার বহু বাসিন্দার দুটো ঠিকানা রয়েছে।’ উল্লেখ্য, ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিভিন্ন সময়ে নানা অভিযোগে জর্জরিত গুলশন কলোনির মতো জনবসতি রয়েছে। আর ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডেও বিভিন্ন সময়ে শিরোনামে এসেছে শহিদ স্মৃতি কলোনি।

    আনন্দপুর এলাকার বাসিন্দা রমেন কয়াল বলেন, ‘পুরসভার রাজস্বের খাতায় লেখা ঠিকানা এবং পোস্টাল অ্যাড্রেস ভিন্ন হওয়ায় সবথেকে সমস্যা হচ্ছে জমি বাড়ির মিউটেশন করানো নিয়ে।’ নিউ গড়িয়ার বাসিন্দা রমেন্দু দত্ত অভিযোগ করেন, ‘আট বছর আগে ফ্ল্যাট কিনে আজও মিউটেশন করাতে পারিনি।’

    এলাকায় কান পাতলেই শোনা যায়, এই জোড়া ঠিকানার সুযোগ নিয়ে এই সব এলাকায় রমরমিয়ে জমি–বাড়ি–ফ্ল্যাট কেনার সিন্ডিকেটের সক্রিয়তার অভিযোগ। দুই ঠিকানার সুযোগ কাজে লাগিয়ে এই সব এলাকায় এক সম্পত্তি একাধিক বার বেচে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ফিরহাদও সে কথা স্বীকার করে নিচ্ছেন — ‘আমি অনেকবার বলেছি এই সব এলাকায় পুরসভার রাজস্বের খাতায় যে ঠিকানা রয়েছে তা ব্যবহার করতে। সেটা কিছুতেই কার্যকর করা যাচ্ছে না।’ অবশ্য কেন তা বাস্তবায়িত করা যাচ্ছে না, তা নিয়ে মেয়র কিছু জানাতে রাজি হননি।

    ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তথা ১২ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তৃণমূলের সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘এই সমস্যা শুধু দুটো ওয়ার্ডের নয়। পুরো সংযোজিত এলাকায় রয়েছে। মেয়রের নজরে আসায় এই সমস্যার সমাধান হবে বলে আমি আশাবাদী।’ ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘ঠিকানা একটা হলেই ভালো। তা হলে যাঁরা মিউটেশন করাতে পারছেন না, তাঁদের আর অসুবিধে হবে না।’

  • Link to this news (এই সময়)