• কোচবিহার বিমানবন্দরে ফেব্রুয়ারি থেকে বন্ধ পরিষেবা!
    আজকাল | ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • মনিরুল হক, কোচবিহার

    বন্ধ হতে চলেছে কোচবিহার বিমানবন্দরের পরিষেবা। গত তিন বছর ধরে এই বিমানবন্দরে একমাত্র বিমান সংস্থা ‘ইন্ডিয়া এয়ার ওয়ান’ বিমান পরিষেবা চালাচ্ছিল। কিন্তু তারা আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সেই পরিষেবা বন্ধ করে দিচ্ছে। সোমবার সংস্থার তরফে এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার (এএআই) কোচবিহার বিমানবন্দরের আধিকারিকের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। তবে পরিষেবা বন্ধের কারণ সম্পর্কে সংস্থা কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়নি। চিঠিতে শুধু ‘অপারেশনাল মোড’ উল্লেখ করে পরিষেবা বন্ধ করার কথা জানানো হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এই তথ্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানিয়েছেন।

    বিমানবন্দর সূত্র জানা গিয়েছে, বিকল্প কোনও বিমান সংস্থা এখনও পর্যন্ত কোচবিহার থেকে পরিষেবা চালুর ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে আগ্রহ দেখায়নি। একটি সংস্থা মৌখিকভাবে আগ্রহ প্রকাশ করলেও সেটি এখনও আলোচনার স্তরেই রয়েছে। ফলে ফেব্রুয়ারি থেকে কোচবিহার ফের বিমানহীন হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা বাড়ছে।

    কোচবিহার বিমানবন্দরের এএআই আধিকারিক শুভাশিস পাল বলেন, “ইন্ডিয়া এয়ার ওয়ান গত তিন বছর ধরে পরিষেবা চালিয়ে আসছে। আজ চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বিমান চালাবে। তারপর পরিষেবা বন্ধ হবে। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”

    রাজার শহর কোচবিহারে বিমান পরিষেবার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। রাজ আমল থেকেই বিমান ওঠানামা করত। কিন্তু বাম আমলের শেষদিকে বিভিন্ন জটিলতার কারণে পরিষেবা অনিয়মিত হয়ে পড়ে এবং ১৯৯৫ সালে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০১১, ২০১৫ সাল ছাড়াও আরও বেশ কয়েকবার বিমান পরিষেবা চালুর চেষ্টা হলেও তা স্থায়ী হয়নি। কখনও কখনও কয়েকদিন চলে আবার বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

    ২০২৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি কোচবিহার থেকে ফের ৯ আসনের বিমান পরিষেবা চালু হয়। যাত্রীর ঘাটতিও ছিল না। সোমবার পর্যন্ত সব আসন ভর্তি নিয়েই বিমান কলকাতা গিয়েছে। তবুও সংস্থা হঠাৎ পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ায় উঠেছে একাধিক প্রশ্ন।

    রাজ্যে আগামী দুই–তিন মাসের মধ্যেই বিধানসভা নির্বাচন। তাই এই সিদ্ধান্ত কোচবিহারের রাজনৈতিক সমীকরণেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। বিমান পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেলে জেলার মানুষের অসুবিধা বাড়বে, সেইসঙ্গে উন্নয়নের দাবি নিয়েও নতুন করে আলোচনা শুরু হবে বলেই মনে করছে জেলার রাজনৈতিক মহল।
  • Link to this news (আজকাল)