‘সঞ্চার সাথী’র মাধ্যমে আমজনতার ফোনে নজরদারি! বিতর্কের জেরে পিছু হটল কেন্দ্র
প্রতিদিন | ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিতর্কের জেরে নতিস্বীকার! ‘সঞ্চার সাথী’ অ্যাপ ইস্যুতে পিছু হটল কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া জানিয়ে দিলেন, ‘ওই অ্যাপ ফোনে রাখাটা বাধ্যতামূলক নয়। কেউ জানলে ডিলিট করে দিতে পারবেন।’
একদিন আগেই মৌখিকভাবে কেন্দ্র মোবাইল সংস্থাগুলিকে জানিয়ে দেয়, প্রতিটি স্মার্টফোনে বাধ্যতামূলকভাবে ইনস্টল করতে হবে সাইবার নিরাপত্তা অ্যাপ। চাইলেও যা ডিলিট করতে পারবেন না গ্রাহকরা। বলা হয়েছে ৯০ দিনের মধ্যে যে সব স্মার্ট ফোন বাজারে নতুন করে আসবে, সমস্ত স্মার্টফোনে এই অ্যাপটি প্রি লোড করতে হবে। বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম মোবাইল প্রস্তুতকারী এবং ব্যবহারকারী দেশগুলির মধ্যে প্রথমের দিকেই রয়েছে ভারত। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১.২ বিলিয়নেরও বেশি। এই সমস্ত ফোনেই বাধ্যতামূলকভাবে সরকারি অ্যাপ যুক্ত করতে চাইছে কেন্দ্র। নয়া এই অ্যাপের নাম ‘সঞ্চার সাথী’। সাইবার প্রতারণা রোখার পাশাপাশি চুরি বা হারিয়ে যাওয়া ফোন ট্র্যাক, কালোবাজারে নকল ফোন বিক্রি রুখতে কার্যকরি অ্যাপটি। কেন্দ্রের রিপোর্ট অনুযায়ী এই অ্যাপ ব্যবহার করে এখনও পর্যন্ত ৭ লক্ষ চুরি যাওয়া ফোন উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। যার মধ্যে ৫০ হাজার ফোন শুধুমাত্র অক্টোবর মাসেই উদ্ধার করা হয়েছে।
ওই সঞ্চার সাথী অ্যাপ সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রকাশ্যে আসার পরই ফুঁসে ওঠে বিরোধী শিবির। বিরোধীদের দাবি সাইবার নিরাপত্তার নামে আসলে আমজনতার ফোনে নজরদারির চেষ্টা করছে মোদি সরকার! এই নতুন অ্যাপের মধ্যে পেগাসাস ‘জুজু’ দেখছে বিরোধীরা। কংগ্রেসের সাংবিধানিক সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল বলছেন, “এটাকে অসাংবিধানিক বললেও কম বলা হয়। এভাবে বিগ ব্রাদার’রা আমাদের উপর নজরদারি চালাতে পারে না।” একই সুরে সরব হয় তৃণমূল-সহ অন্য বিরোধীরাও।
শেষমেশ এই প্রবল বিরোধিতার জেরে পিছু হটল কেন্দ্র। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বললেন, “এই অ্যাপ সকলের ফোনে রাখাটা আমাদের কর্তব্য। কিন্তু সেটা ফোনে গ্রাহক রাখবেন কিনা, সেটা গ্রাহকের সিদ্ধান্ত।” সিন্ধিয়া জানিয়ে দিয়েছেন, ফোনে ওই অ্যাপ রাখা বাধ্যতামূলক নয়। চাইলেই সেটা ডিলিট করা যাবে। বিরোধীদের দাবি, চাপেই ফের পিছু হটার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র।