ভুয়ো নথি দেওয়ার অভিযোগ, রাজগঞ্জের বিডিওর আগাম জামিনের বিরোধিতা করে হাই কোর্টে পুলিশ
প্রতিদিন | ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
গোবিন্দ রায়: দত্তাবাদে স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুনে রাজগঞ্জের ‘বিতর্কিত’ বিডিও (Rajganj BDO) প্রশান্ত বর্মনের আগাম জামিনের বিরোধিতা করে হাই কোর্টে পুলিশ। বারাসত আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের। মামলা দায়েরের অনুমতি মিলেছে বলে খবর।
স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কামিল্যা খুনে তাঁর পরিবার বিডিও প্রশান্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তবে বিডিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বারাসত আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেন। সেই আবেদন মঞ্জুর করে আদালত। পরে বিধানগর মহকুমা আদালতে হাজিরা দিয়ে তা কার্যকর করেন তিনি। এই ঘটনায় পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। এরপরই উচ্চপর্যারের একটি বৈঠক করে বিধাননগর কমিশনারেট পুলিশ। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় হাই কোর্টের দ্বারস্থ হবে পুলিশ।
কিন্তু কীসের ভিত্তিতে? পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিডিওর আইনজীবী বারাসত আদালতে জানিয়েছেন, ঘটনার দিন প্রশান্ত বর্মন নিউটাউনের আবাসনে ছিলেন না। ছিলেন একটি গেস্ট হাউসে। তার একটি রশিদ দেওয়া হয়েছে। পুলিশের দাবি, সেই রশিদ ভুয়ো। সেই প্রমাণই হাতিয়ার করে হাই কোর্টে বিধাননগর পুলিশ। পুলিশের আরও দাবি, ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, বিডিওর নিউটাউনের ফ্ল্যাটে। ঘটনার দিন তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আদালতে মিথ্যা কথা বলেছেন।
নিহত স্বর্ণ ব্যবসায়ীর নাম স্বপন কামিল্যা। তিনি আদতে পশ্চিম মেদিনীপুরের নীলদা পোস্টঅফিস এলাকার দিলামাটিয়ার বাসিন্দা। দত্তাবাদে সোনার গয়নার দোকান রয়েছে তাঁর। পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, গত ২৮ অক্টোবর দোকান থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। বিধাননগর দক্ষিণ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। তারপরই নিউটাউনের যাত্রাগাছির বাগজোলা খালপাড় এলাকার ঝোপ থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। ছবি দেখে পরিবার দেহ শনাক্ত করে। পরিবারের দাবি, অপহরণ করে খুন করা হয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে।
এই ঘটনায় নাম জড়ায় রাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মনের। অভিযোগ, অপহরণ এবং খুনে পুরোপুরি যুক্ত বিডিও। পরিবারের দাবি, গত প্রায় ১০-১৫ বছর ধরে দত্তাবাদে দোকান ভাড়া করে ব্যবসা করেন স্বর্ণব্যবসায়ী। দিনকয়েক আগে নাকি ‘বিতর্কিত’ বিডিওর বাড়ি থেকে বেশ কিছু গয়নাগাটি চুরি যায়। ওই গয়নাগাটি স্বর্ণ ব্যবসায়ীর দোকানে বিক্রি করা হয় বলেই দাবি করেন বিডিও। সে সংক্রান্ত খোঁজখবর নিতেই নাকি প্রথমবার আসেন বিডিও। তা নিয়ে সংঘাতের মাঝে গত ২৮ অক্টোবর, একটি নীলবাতি গাড়ি নিয়ে ফের দত্তাবাদের গয়নার দোকানের সামনে আসেন বিডিও। ওই গাড়ি থেকেই নাকি নামতে দেখা যায় তাঁকে। তাঁর সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিলেন বলেই দাবি স্বর্ণব্যবসায়ীর পরিবারের। ওই গাড়িতে করে তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া পর। পরদিন উদ্ধার হয় দেহ। এই ঘটনার পর থেকে অন্তরালে চলে যান বিডিও।