নবান্নের বৈঠকের পর তিন দিনের জেলা সফরে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধ ও বৃহস্পতিবার এই দু’দিন মুর্শিদাবাদ এবং মালদহ জেলায় জনসভা করবেন তিনি। তারপর কলকাতায় ফিরে আসবেন। এরপর আবার ৯ ডিসেম্বর কোচবিহার জনসভা করতে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার বিকেলে আকাশপথে বহরমপুরে এসে পৌঁছান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার এদিন বহরমপুর ব্যারাক স্কোয়ার ময়দানে এসে পৌঁছোয়। মুখ্যমন্ত্রী আসার আগেই কয়েক হাজার মানুষ ভিড় করেছিলেন হেলিপ্যাডের চারপাশে। তাদের মধ্যে মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এদিন মহিলারা দুপুর থেকেই হাতে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি লাগানো প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী হেলিকপ্টার থেকে নেমেই মাঠে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে হাত নাড়তে নাড়তে হেলিপ্যাডের চারপাশ ঘোরেন। মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন তারা।
Advertisement
মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ব্যারাক স্কোয়ার ময়দানে উপস্থিত ছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলাশাসক নীতীশ সিংহানিয়া, মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার সুপার কুমার সানিরাজ এবং অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকরা। তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে দলের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন মাঠে। দলের বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ এবং জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি যথাক্রমে বিধায়ক অপূর্ব সরকার এবং সাংসদ খলিলুর রহমান, মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি রুবিয়া সুলতান ছাড়াও রাজ্য সভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অন্যান্য নেতৃত্বও উপস্থিত ছিলেন।
দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে স্বল্প কথা বলেই মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছোন ব্যারাক স্কোয়ার লাগোয়া বহরমপুর সার্কিট হাউসে। রাতে এখানেই থাকবেন তিনি। বুধবার সকালে মালদার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। সেখানে সভা শেষ করে বিকেলে ফের ফিরে আসবেন বহরমপুরে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বহরমপুর স্টেডিয়ামে সভা করে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। মুখ্যমন্ত্রীর তিনদিনের মুর্শিদাবাদ-মালদহ সফর ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর এবং আঁটোসাঁটো করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চব্বিশের লোকসভা ভোটে মালদহ অধরা ছিল। এই জেলার দুটি লোকসভা কেন্দ্রের একটিতে বিজেপি, আরেকটিতে কংগ্রেস জিতেছে। এছাড়া এই জেলায় তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে এখনও বিস্তর দ্বন্দ্ব রয়েছে। যা মাঝেমধ্যেই প্রকাশ্যে আসে। ছাব্বিশের ভোটে তার প্রভাব যাতে একবিন্দুও না পড়ে, তার প্রস্তুতি শুরু করে দিতে চাইছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মত রাজনৈতিক মহলের। এছাড়া মুর্শিদাবাদও রয়েছে নানা সমস্যা। চলতি বছরের প্রথমদিকে ধুলিয়ানের সাম্প্রদায়িক অশান্তির জের গড়িয়েছিল বহু দূর। সেই অশান্তি শক্ত হাতে সামলে ছিলেন তৃণমূলের দুই বিধায়ক। এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সফর গুরুত্বপূর্ণ।