দক্ষিণবঙ্গে বন্যা নিয়ন্ত্রণে দ্রুত ডিভিসি-ফরাক্কা সংস্কারের দাবি জুন মালিয়ার
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫
দক্ষিণবঙ্গের বার্ষিক বন্যা পরিস্থিতিকে ‘মানুষের জীবনের প্রতি নির্মম উদাসীনতা’ বলে দাবি করে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনেই ডিভিসি ও ফরাক্কা ব্যারেজের দ্রুত সংস্কারের দাবি তুললেন তৃণমূল সাংসদ জুন মালিয়া। সোমবার লোকসভায় ৩৭৭ ধারা অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে লিখিত প্রস্তাব জমা দেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, বর্ষার মরশুমে নিয়ম মানা তো দূরের কথা, রাজ্যকে না জানিয়েই বারবার জল ছাড়ছে ডিভিসি। এর জেরে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্রতি বছর ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ছে।
এর জেরে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির মধ্যে ডিভিসির জলছাড়া নিয়ে যে টানাপড়েন বহু বছর ধরেই চলছে, জুন মালিয়ার এই বক্তব্যে তা আবারও সংসদমঞ্চে তীব্র হয়ে উঠল।
Advertisement
জুন মালিয়ার বক্তব্য, রাজ্য সরকার বারবার জানিয়ে এসেছে— ডিভিসির একতরফা সিদ্ধান্ত এবং দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারহীন অবস্থায় পড়ে থাকা বাঁধগুলিই বন্যার মূল কারণ। রাজ্যের সেচ দপ্তরের তরফেও অভিযোগ, সংস্কার না হওয়ায় বাঁধগুলির জলধারণ ক্ষমতা আগের তুলনায় অনেকটাই কমে গিয়েছে। এর ফলে বর্ষাকালে সামান্য চাপ পড়লেই বিশাল এলাকা প্লাবিত হয়। যৌথ কমিটিতে রাজ্যের প্রতিনিধি না-থাকার কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে বলেও তিনি দাবি করেন।
পেশ করা প্রস্তাবপত্রে জুন মালিয়া বিস্তারিত তথ্য দিয়ে জানান, ২০২৩, ২০২৪ ও ২০২৫— টানা তিন বছর ধরে ডিভিসি থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বেড়েই চলেছে। তাঁর কথায়, ‘এই জলছাড়ার ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন-জীবিকা বিপন্ন হয়ে পড়ছে। বন্যায় নষ্ট হচ্ছে বাড়িঘর, জমির ফসল, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামাঞ্চলের পরিকাঠামো। অথচ কেন্দ্র সরকার এই সমস্যাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না।’ তিনি উল্লেখ করেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক বার কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে দ্রুত হস্তক্ষেপের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়নি।
প্রস্তাবপত্রে জুন স্পষ্ট ভাষায় দাবি করেছেন, ‘একতরফা ভাবে জল ছাড়া বন্ধ করতে হবে। দক্ষিণবঙ্গের মানুষ বারবার ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন না। আমাদের জনজীবন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আর দেরি নয়, ডিভিসি ও ফরাক্কা ব্যারেজের অবিলম্বে সংস্কার চাই। কেন্দ্রকে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে।’