অর্কদীপ্ত মুখোপাধ্যায়: বাংলায় এসআইআর (SIR West Bengal) পর্বে মৃত ভোটারের (Dead Voter) সংখ্যা বেড়ে হল ২২ লক্ষ ২৮ হাজার। এখনও অবধি প্রায় ৯০ শতাংশ এনুমারেশন ফর্মের ডিজিটাইজেশনের (Enumeration Form) কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। আর সেই হিসেবে কমিশনের (Election Commission) দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত আন-কালেক্টেবল ফর্মের সংখ্যা হল ৪৬ লক্ষ ২০ হাজার।
এখন ভোটারদের মনে প্রশ্ন উঠতে পারে, এই আন-কালেক্টেবল (Uncollectable Form) বলতে ঠিক কাদের কথা বলা হচ্ছে। কমিশন (election Commission) আগেই জানিয়েছিল, যারা মৃত, পাওয়া যায়নি বা অনুপস্থিত, পার্মানেন্টলি শিফটেড অর্থাৎ যাঁরা স্থায়ীভাবে সরে গিয়েছে, আগেই এনরোল করা ছিল বা নাম ছিল এবং অন্যান্যদের মিলিয়ে এই আন-কালেক্টেবল।
নীচে দেওয়া তথ্যটি ভোটার তালিকা সংশোধনের রিপোর্ট। নির্বাচন সূত্রে পাওয়া তথ্যের উপর নির্ভর করে এখনও পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে তাতে, মোট পরিসংখ্যান-
মৃত (Dead): ২২ লক্ষ ২৮ হাজার
নিখোঁজ বা সন্ধান পাওয়া যায়নি (Untreatable/Absent/Uncollectable Forms):৬ লক্ষ ৪১ হাজার
স্থানান্তরিত (Shifted)১৬ লক্ষ ২২ হাজার
দ্বৈত প্রবেশ/ডুপ্লিকেট (Double entry/Duplicate)১ লক্ষ ৫ হাজার
মোট (Total)৪৬ লক্ষ ২০ হাজার
অসংগ্রহযোগ্য ফর্ম (Uncollectable forms)
নতুন পোলিং বুথ সংক্রান্ত নির্দেশিকা
৬টি জেলাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে সব হাই-রাইজ বিল্ডিং বা কমপ্লেক্সে কমপক্ষে ৮০০ ভোটার আছেন, সেখানে পোলিং বুথ তৈরি করতে হবে।
জেলাগুলি: হাওড়া, হুগলি, কলকাতা উত্তর, কলকাতা দক্ষিণ, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা।
জেলা অনুযায়ী মৃত ভোটারের শতাংশ (মোট ভোটারের ভিত্তিতে)
জেলা মৃত ভোটারের শতাংশ-
মোট সংখ্যা সর্বোচ্চ (Highest):
কলকাতা উত্তর: ৬.৯১%১ লক্ষ ৪ হাজার ৭৬
কলকাতা দক্ষিণ: ৬.০৬%৫৪,৯৮৫
উত্তর ২৪ পরগনা: ৩.৪৭%২,৮৮,০০০
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ৩.২৫%২,৭৯,০০০
সর্বনিম্ন (Lowest):
পূর্ব মেদিনীপুর১.৪%৫৯,৮০০
পশ্চিম মেদিনীপুর২%৮০,১৩০
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
বিরোধী দলনেতা (LoP)-এর অডিয়ো রিলিজ নিয়ে কমিশন রিপোর্ট চেয়েছে।
মোট ভোটার (সংশোধিত সংখ্যা): ৪৭,০৬,৯০২ লক্ষ
বিভাগ অনুযায়ী শেষ রিপোর্ট:
মৃত (Dead): ২২ লক্ষ ৪৫ হাজার ৮৬১
স্থানান্তরিত (Shifted): ১৬ লক্ষ ৫৩ হাজার ৮৩৩
অনুপস্থিত (Absent/Untreatable): ৬ লক্ষ ৭৬ হাজার ৬২১
ডুপ্লিকেট (Duplicate): ১ লক্ষ ৭ হাজার ৭৮১
১০০ শতাংশ প্রোজেনি বুথ
সেলফ ম্যাপিং জিরো
কোচবিহার এর দিনহাটা বিধানসভার ১ টি বুথ যার পার্ট নম্বর ১১০, যেখানে ৭৮২ ভোটার ই প্রোজেনি ম্যাপিং করেছে। অর্থাৎ এই বুথে একজনকেও পাওয়া যায়নি যাদের নাম ২০০২ এর তালিকায় রয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি বিধানসভার বুথের পার্ট নম্বর ৪৮, যেখানে ভোটার ৭৬৮ সবাই প্রোজেনি ম্যাপিং করিয়েছে।
হুগলির পান্ডুয়া বিধানসভার ৫৩ পার্ট নম্বর বুথের মোট ৬৬৮ জন ভোটারের সবাই প্রোজেনি ম্যাপিং করিয়েছে।
কমিশন রিপোর্ট তলব করেছে এইসব ক্ষেত্রে। কমিশন মনে করছে এটাও এক প্রকার অসম্ভব যে এই তিনটে বুথের একজন ভোটারের নামও ২০০২ এর তালিকায় নেই।
কমিশন খবর পেয়েছে, অনেক জায়গায় তিনবার করে ভিজিট করার পরেও চূড়ান্ত তালিকা আপলোড করতে দেরি করছেন বেশ কিছু বিএলও। এমনও খবর পাওয়া গিয়েছে যে স্থানীয় প্রশাসনের কর্তারাই নাকি বিএলও-দের বলছেন এখন কিছু আপলোড করার দরকার নেই, একেবারে শেষ মুহূর্তে যখন বলা হবে তখন করলেও হবে। যা নিয়ে অত্যন্ত বিরক্ত প্রকাশ করেন স্পেশ্যাল অবজার্ভার। ঘুরিয়ে জানতেও চেয়েছিলেন, ঠিক কার নির্দেশের অপেক্ষা করছেন বিএলও-রা। কমিশনের বক্তব্য, এই আপলোডের প্রসেস যত তাড়াতাড়ি মিটবে, তত স্পষ্ট হবে বাংলার মৃত ভোটারের আসল সংখ্যাটা।