অর্ণব আইচ: গয়নার বদলে সোনার বিস্কুট। হুগলির গয়না ব্যবসায়ীর সঙ্গে এমনই চুক্তি হয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার ঘোলার গয়না ওয়ার্কশপের। কারিগরের কাছ থেকে সোনার বিস্কুট হাতে নিয়ে ঘোলায় সোনার দোকানে ফিরে গিয়েছিলেন ব্যবসায়ীর এক কর্মচারী। কিন্তু সেই সোনার বিস্কুট পরীক্ষা করেই মাথায় হাত ব্যবসায়ীর। ৩৩ লাখ টাকার সোনার গয়নার বদলে হাতে নকল সোনার বিস্কুট গছিয়ে দিয়ে উধাও হয়ে গিয়েছে হুগলির ওই ব্যক্তি।
তার কোনও সন্ধান না পেয়ে প্রথমে ওই ব্যবসায়ী ঘোলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু অভিযোগকারী ব্যবসায়ীর অভিযোগ অনুযায়ী, ওই সোনার গয়না ও নকল সোনার বিস্কুট হস্তান্তর হয়েছে মধ্য কলকাতার পোস্তা এলাকায়। তাই প্রাথমিকভাবে ঘোলা থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও পুলিশ আধিকারিকরা ‘জিরো এফআইআর’ নেন। ক্রমে তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে পোস্তা থানায়। সোমবার বেশি রাতে পোস্তা থানায় গয়না হাতানোর অভিযোগ দায়ের হয়। পোস্তা থানার পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই গয়না ওয়ার্কশপের মালিক ঘোলা এলাকার নাটাগড়ের বাসিন্দা। তাঁর সঙ্গে হুগলির বাসিন্দা তথা গয়নার ব্যবসায়ীর যোগাযোগ হয়। দু’জনের মধ্যে এমনভাবে চুক্তি হয় যে, ঘোলার ব্যবসায়ী তাঁকে গয়না দেবেন। তার বদলে টাকা নয়, সোনার বিস্কুট দেবেন হুগলির ব্যবসায়ী। ঘোলার ব্যবসায়ীকে জানানো হয় যে, হুগলির ব্যবসায়ী ঘোলায় যাবেন না। তার বদলে তিনি আসবেন পোস্তার সোনাপট্টিতে। ঘোলার ব্যবসায়ী তাঁর এক কর্মচারীর হাত দিয়ে প্রায় ২৫৯ গ্রাম সোনার গয়না পাঠান।
পোস্তার একটি মিষ্টির দোকানের সামনে গয়নার হস্তান্তর হয়। ৩৩ লাখ টাকার গয়না একটি প্যাকেটে করে ওই ব্যক্তিটি নিয়ে নেন। চুক্তিমতো তার বদলে দেন দু’টি সোনার বিস্কুটও। সেগুলি এমনই দেখতে, আসলের সঙ্গে সহজে পার্থক্য বোঝাও মুশকিল। কিন্তু ওয়ার্কশপে নিয়ে যাওয়ার পর পরীক্ষা করার পরই ধরা পড়ে যে, সেগুলি সম্পূর্ণ নকল। এই ব্যাপারে অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত সোনার ব্যবসায়ীর সন্ধানে পুলিশ হুগলির রিষড়ায় হানা দেয়। বাড়ি থেকে কিছু গয়না উদ্ধার করা হয়েছে। যদিও অভিযুক্ত ব্যবসায়ী পলাতক। তাঁর সন্ধানে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।