• পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগের পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস? ঝাড়খণ্ডে গ্রেফতার ১৭ জন
    আনন্দবাজার | ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ঝাড়খণ্ডের একটি হোটেলে হঠাৎ ভিড়। বেশির ভাগই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। অভিযোগ, ভিন্‌রাজ্যের দালাল মারফত কনস্টেবল নিয়োগের ফাঁস করা প্রশ্নপত্র হাতে পেতেই ওই জায়গায় ভিড় করেছিলেন এঁরা। রাস্তায় নাকা তল্লাশি চালাতে গিয়ে এমনই দুর্নীতি চক্রের হদিস পায় ঝাড়খণ্ড পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে মোট ১৭ জনকে। তদন্তের স্বার্থে বাংলা থেকে ঝাড়খণ্ডে গিয়েছেন এ রাজ্যের কয়েক জন পুলিশকর্তা।

    রবিবার ছিল রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা। প্রায় ১১ হাজারের বেশি শূন্যপদ রয়েছে এ বার। ঝাড়খণ্ড পুলিশের একটি সূত্রে খবর, ওই পরীক্ষার অন্তত এক সপ্তাহ আগে ‘ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র’ হাতে পেতে ঝরিয়ার একটি হোটেলে জড়ো হন বাংলার বেশ কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী। ঝাড়খণ্ড পুলিশের নির্দেশে ধানবাদ জুড়ে অপরাধ দমন অভিযান চলছিল। সেই অভিযানেই ধরা পড়েন সন্দেহভাজন ১৭।

    রবিবার ঝরিয়া থানার ঘনুয়াডিহ সেতুর কাছে নাকা তল্লাশির সময় একটি চারচাকার গাড়ি আটক করে ঝাড়খণ্ড পুলিশ। চালক-সহ গাড়িতে থাকা অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের পরীক্ষায় জালিয়াত চক্রের হদিস পায় তারা। পুলিশের দাবি, ঝাড়খণ্ডে বসে বাংলার চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে উত্তর সাজিয়ে তা কয়েক জন পরীক্ষার্থীকে দেওয়া হয়েছিল। তবে পরীক্ষায় কারচুপির আগেই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

    ওই গাড়িতে থাকা ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঝরিয়ার এক লজে হানা দিয়েছিল পুলিশ। সেখান থেকে প্রচুর অ্যাডমিট কার্ড, প্রশ্নপত্র এবং উত্তরপত্রের কাগজ, লজের রেজিস্টার বুক, বেশ কয়েকটি মোবাইল ফোন, স্মার্ট ওয়াচ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বেশ কয়েক জন পরীক্ষার্থীর পরিচয়পত্র, ব্যাঙ্কের নথি-সহ বেশ কিছু কাগজপত্র পাওয়া গিয়েছে।

    ঝাড়খণ্ড পুলিশের দাবি, প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষা নিয়ে একটি অসাধু চক্র চলছিল। ওই চক্রের ‘সদস্যেরা’ মূলত নদিয়া জেলার। রানাঘাট, চাকদহ, হাঁসখালি থেকে বেশ কয়েক জন পরীক্ষার্থীকে নিয়ে গিয়ে ওই লজে রাখা হয়েছিল। রবিবার কনস্টেবল নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার আগে তাঁদের উত্তর মুখস্থ করানো হচ্ছিল। মোট ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১৬ জনই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন ওই লজের মালিকও। ধানবাদের (শহর) পুলিশ সুপার ঋত্বিক শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা এসে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে। এই র‌্যাকেটের সঙ্গে কারা কারা যুক্ত, কত দিন ধরে এই চক্র সক্রিয় ছিল বা আছে, সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)