৩২ হাজার চাকরি বাতিল করেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ! প্রাথমিকের সেই মামলায় বুধবার রায় হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে
আনন্দবাজার | ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
রাজ্যে প্রাথমিক নিয়োগ মামলার রায় বুধবার ঘোষণা করবে কলকাতা হাই কোর্ট। দুপুর ২টোয় হবে রায় ঘোষণা। প্রাথমিকের ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করে দিয়েছিলেন হাই কোর্টে তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের হয়। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার রায় ঘোষণা করবে। টেটে ৪২ হাজার ৫০০ জনের বেশি নিয়োগ হয়েছিল। তার মধ্যে ৩২ হাজার অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকের চাকরি বাতিল করে দিয়েছিল হাই কোর্ট।
২০১৪ সালের ‘টেট’-এর ভিত্তিতে ২০১৬ সালে প্রাথমিকে প্রায় ৪২৫০০ শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল। ওই নিয়োগ প্রক্রিয়াতেই বেনিয়মের অভিযোগ ওঠে। পরে ২০২৩ সালের মে মাসের ১২ তারিখ ওই মামলার রায় ঘোষণা করেছিলেন হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশে চাকরিচ্যুত হন প্রশিক্ষণহীন ৩২ হাজার শিক্ষক।
প্রাক্তন বিচারপতির রায় ছিল, চাকরি বাতিল হলেও ওই শিক্ষকেরা স্কুলে যাবেন। তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে রাজ্যকে। সেখানে যোগ্য এবং উত্তীর্ণদের চাকরি বহাল থাকবে। সিঙ্গল বেঞ্চের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যায় পর্ষদ। তৎকালীন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের চাকরি বাতিল সংক্রান্ত রায়ের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে।
তবে একই সঙ্গে ওই ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ মতো নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া পর্ষদকে শুরু করতে হবে। হাই কোর্টের ওই দুই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য এবং পর্ষদ। সেখানে আবেদন জানান চাকরিহারাদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, সিঙ্গল বেঞ্চ শুনানিতে সব পক্ষকে বলার সুযোগ দেয়নি। সব পক্ষের বক্তব্য শোনেনি আদালত। ওই বছর শীর্ষ আদালত হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চকে সব পক্ষের বক্তব্য শুনতে নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরে মামলা যায় বিচারপতি চক্রবর্তী এবং বিচারপতি মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে। ১২ নভেম্বর হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি শেষ হয়। রায় স্থগিত রেখেছিল হাই কোর্ট।
মামলাকারী পক্ষের অভিযোগ, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ার নিয়ম মানা হয়নি বলেও অভিযোগ তাঁদের। অন্য দিকে, রাজ্য সরকার এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বক্তব্য, দুর্নীতির কোনও প্রমাণ নেই। কয়েকটি ক্ষেত্রে কিছু অনিয়ম হয়েছে। পরে তা সংশোধনও করে নেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক অভিসন্ধি থেকেই ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হচ্ছে। বুধবার এই মামলার কী রায় দেয় হাই কোর্ট, সে দিকে নজর চাকরিপ্রার্থী-সহ সকলের।