জেলায় বেপরোয়া গতির গাড়ি ধরতে আরও দুশোটি স্পিড গান
আনন্দবাজার | ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
শীতকালে কুয়াশার জেরে কমেছে রাস্তার দৃশ্যমানতা। এর ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে রাজ্য এবং জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। কিছু চালকের বেপরোয়া গতি সেই আশঙ্কাকেই কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এ বার বেপরোয়া গাড়ির বিরুদ্ধে আরও বেশি করে ব্যবস্থা নিতে সম্প্রতি রাজ্য পুলিশের তরফে জেলা এবং কমিশনারেট এলাকাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ জন্য জেলাগুলিকে নতুন করে দুশোটির মতো স্পিড লেজ়ার গান মেশিন দেওয়া হয়েছে।
এই সব যন্ত্রের সাহায্যে সূক্ষ্ম ভাবে বেপরোয়া গাড়ির গতিমাপার পাশাপাশি অভিযুক্ত গাড়ি ও বাইকের ছবি আগের তুলনায়আরও স্পষ্ট ভাবে তোলা যায়। পাশাপাশি, যে সব বাইক ও গাড়ি নির্ধারিত গতি ভেঙে ছুটবে, ওই স্পিড লেজ়ার গান তাদের শনাক্ত করতে পারবে। জাতীয় এবং রাজ্য সড়কে পুলিশের বেঁধে দেওয়া সর্বোচ্চ গতিসীমা লঙ্ঘন করলেই ওই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে বিভিন্ন জেলা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর।
রাজ্য ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘প্রতি বার শীত পড়লেই কুয়াশার জন্য দৃশ্যমানতা কমে যায়। বছরের এই সময়টায় পিকনিক বা বাইক নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে বেশির ভাগ চালক বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালান। তাঁদের শায়েস্তা করতেই এই লেজ়ার গান দিয়ে বেপরোয়া গতির গাড়ি এবং মোটরবাইকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পুলিশের ৩৪টি ইউনিট ইতিমধ্যেই বেপরোয়া গতির গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে।’’
বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে কেউ সর্বোচ্চ গতিবেগের সীমা লঙ্ঘন করলে তাঁর ১০০০-২০০০ টাকা জরিমানা এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স সাসপেন্ড হতে পারে।
রাজ্য পুলিশ এই নির্দেশ জারি করার পরে জেলা পুলিশের তরফে তা কার্যকর করা হলেও জানা গিয়েছে, ভোরে এবং রাতে বেপরোয়া গতির গাড়ি ধরতে রাস্তার ধারে স্পিড লেজ়ার গান নিয়ে কোনও পুলিশকর্মী থাকবেন না। সে ক্ষেত্রে রাজ্য এবং জাতীয় সড়কে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর অভিযোগ উঠলে সেটির বিরুদ্ধে কী ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে?
পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, জেলার বিভিন্ন ব্যস্ত রাস্তা, বিশেষ করে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা বেছে নিয়ে সেখানে গাড়ির গতিতে রাশ টানার জন্য রয়েছে স্বয়ংক্রিয় ‘স্পিড ভায়োলেশন ডিটেকশন ক্যামেরা’। যেটি স্পিড লেজ়ার গান মেশিন থেকে ভিন্ন প্রকৃতির। তবে ‘স্পিড ভায়োলেশন ডিটেকশন ক্যামেরা’ জেলাগুলিতে খুব বেশি হলে দু’টি জায়গাতেই আছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। ওই ক্যামেরার সঙ্গেই রয়েছে গতি মাপার যন্ত্র। নির্ধারিত গতির বেশি জোরে গাড়ি চালালে অভিযুক্ত গাড়ির নম্বর-সহ কত কিলোমিটার গতিতে তা চলছে, তা রেকর্ড হয়ে যায় ওই ক্যামেরায়। যা সরাসরি মেসেজ আকারে চলে যায় অভিযুক্ত গাড়ির মালিকের কাছে। তাতে গতিভঙ্গের ছবি-সহ গাড়িটি কখন, কোথায়, কত গতিতে আইনভঙ্গ করেছে— তার বিস্তারিত বিবরণ থাকে।
আপাতত স্পিড লেজ়ার গান দিয়ে বেপরোয়া গতির গাড়ি ঠেকানোর উপরে পুলিশ জোর দিচ্ছে।